বনগাঁয় এক মতুয়া বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারছেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। নিজস্ব চিত্র।
দলীয় কর্মসূচিতে এসে মতুয়া ভক্তের বাড়িতে দুপুরে খাওয়াদাওয়া করলেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। বাঙালি খাবার খেয়ে খুশি মন্ত্রী। খুব ভাল খেয়েছেন, বলে গেলেন।
রবিবার সকালে দলীয় গৃহসম্পর্ক অভিযান কর্মসূচিতে যোগ দিতে গজেন্দ্র বনগাঁ শহরে আসেন। দুপুরে যান বিবেকানন্দপল্লির বাসিন্দা অর্চনা বণিকের বাড়িতে। সেখানে ছোট একটি প্যান্ডেল করা হয়েছিল। চেয়ার-টেবিল পাতা ছিল।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খেতে বসেন। একই সঙ্গে বসেন বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও দলের রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে মাটির থালা-গ্লাসে খেতে দেওয়া হয়। থালার উপরে কলাপাতা ছিল। খাওয়া শুরুর আগে মন্ত্রী বোতলের জল দিয়ে হাত ধুয়ে নেন। পরিবারের লোকজন সাবান এগিয়ে দেন। মন্ত্রী অবশ্য হাতে সাবান দেননি। একে একে পাতে পড়তে থাকে ভাত, ডাল, লম্বা করে কাটা বেগুন ভাজা, বাঁধাকপি, ফুলকপির তরকারি, পনির। শেষপাতে ছিল মিষ্টি।
এ দিন মন্ত্রী আসবেন বলে রান্না করেছেন অর্চনা। বিজেপির মহিলা কর্মীরা তাঁকে সহযোগিতা করেন। অর্চনার স্বামী স্বপন মারা গিয়েছেন। তিনি মিষ্টির কারবার করতেন। স্বপন দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপি করতেন। তাঁদের ছেলে বিদেশে কাজ করেন। অর্চনা বলেন, ‘‘মন্ত্রী আমার বাড়িতে খাওয়ায় খুব ভাল লাগছে। স্বামী বিজেপি করতেন। তিনি আজ বেঁচে থাকলে খুবই খুশি হতেন। ভাবতেই পারছি না, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমাদের বাড়িতে খেলেন।’’
অর্চনাদের টিন-বেড়া-ইটের বাড়ি। মন্ত্রীর কাছে অর্চনা জানান, সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাননি। মন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করেন।
কেন অর্চনার বাড়িতে মন্ত্রীকে খাওয়ানো হল?
বিজেপির বনগাঁ শহর উত্তর পৌর মণ্ডলের সভাপতি শোভন বৈদ্য বলেন, ‘‘অর্চনাদেবীর স্বামী বিজেপি করতেন। উনি মতুয়া। তাই মন্ত্রীর ইচ্ছা মতো মতুয়া বাড়িতে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’’
কিছু দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে এসে এক মতুয়া বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন। এ দিন খাওয়া শেষে গজেন্দ্র বলেন, ‘‘আমাদের দলে উঁচু-নিচু জাতপাত নেই। আমরা সকলে মিলে একটা পরিবার। যে কোনও বাড়িতে আমরা খাওয়া-দাওয়া করতে পারি।’’
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বনগাঁ মহকুমা মতুয়া অধ্যুষিত। ভোটে মতুয়াদের ভূমিকা থাকে। সামনেই বিধানসভার ভোট। তার আগে মতুয়া বাড়িতে খেয়ে বিজেপি বার্তা দিল, তারা মতুয়াদের পাশে আছে।
জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ অবশ্য বিজেপির কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘মতুয়াবাড়িতে খেয়ে মতুয়াদেরই বাংলাদেশে পাঠানোর চক্রান্ত করছে বিজেপি। বনগাঁয় এসেও কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী ইছামতী নদীর দিকে তাকিয়ে দেখলেন না। বনগাঁ নিয়ে কেন্দ্রের এই বঞ্চনার জবাব দেবে মানুষ।’’