উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাংসদ এবং মন্ত্রী হয়েছেন ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনু ঠাকুর। এই অভিযোগে সোমবার কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনুর বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল ‘ইউনাইটেড ফোরাম ফর ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংগঠন। আর সেই বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে চরম কোলাহল ঠাকুরবাড়িতে। ওই সংগঠন এবং মতুয়া মহাসঙ্ঘের লোকজন একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা, মারধরের অভিযোগ আনল। যদিও গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত শান্তনুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে এই বিক্ষোভের মধ্যে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি কলকাতা পুরসভার বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষের দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে শহরে পা রাখবেন।
সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ ঠাকুরবাড়ি ঘেরাও করে ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ ভোট ফর ইন্ডিয়া’ সংগঠন। তাদের অভিযোগ, ‘‘সিএএ-এর নামে মানুষকে ভাঁওতা দিয়েছেন শান্তনু। সিএএ- এর মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে মতুয়া নেতা শান্তনু ঠাকুর উদ্বাস্তুদের ভোট নিয়ে সংসদ এবং মন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাননি।’’ কয়েকশো মতুয়া এবং উদ্বাস্তু মানুষ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ির দিকে এগিয়ে যান। বাধা পেয়ে তাঁরা ঠাকুরবাড়ির সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। সংগঠনের উপদেষ্টা মানিক ফকিরকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তার পর আরও ঘোরালো হয় পরিস্থিতি। অভিযোগ, শান্তনুর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়া হবে বলে মানিককে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে। মানিকের দাবি, তাঁকে বেদম মারধর করেছেন আরএসএসের লোকজন। তাঁর কথায়, ‘‘শান্তনু ঠাকুরকে বলব, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেবেন বলেছিলেন। এমনকি, সিএএ- ২০১৯ আইনে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ নেই। এ নিয়ে প্রশ্ন করতে যেতাম। কিন্তু আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করল। কেন্দ্রীয় বাহিনী আমাকে ঠেলে দিয়েছে। আরএসএসের লোকজন আমায় প্রচুর মেরেছে।’’
যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্যরা। মহাসঙ্ঘে কার্যকরী সভাপতি অনাদি বিশ্বাস বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের দিক থেকে আমাদের অফিসে ইট মারা হয়েছে। মানিক ফকিরকে মারধরের কোনও দৃশ্য আমাদের চোখে পড়েনি।’’
বেশ কিছু ক্ষণ উত্তেজনার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশের হস্তক্ষেপে আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পরিস্থিতি।