শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
বর্ধিত বেতন নিয়ে বিজেপি বিধায়কেরা কী করবেন? তা জানিয়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস অনুমোদন না দেওয়ায় মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন সংক্রান্ত বিল পেশ হলেও আলোচনা হয়নি। বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পরেই তার বিরোধিতা করেন শুভেন্দু। নিজের সেই অবস্থানে অনড় থেকে বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমরা মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আমাদের প্রতিবাদের কথা প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছি। বিধানসভায় আজ (সোমবার) আলোচনা করার সুযোগ ছিল না তাই প্রকাশ্যেই জানাচ্ছি যে, আমি ব্যক্তিগত ভাবে বর্ধিত বেতন নেব না। কারণ, আমরা মনে করি আগে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের পুজোর বোনাস দেওয়া উচিত, সমকাজে সমবেতন দেওয়া উচিত, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় হারের ডিএ দেওয়া উচিত, প্রাক্তন বিধায়কদের পেনশন বৃদ্ধি করা উচিত।” মুখে বিরোধী দলনেতা এমন কথা বললেও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সরাসরি বর্ধিত বেতন তাঁর এবং বিজেপি বিধায়কদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। এমন পরিস্থিতির প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “বর্ধিত বেতন নিয়ে কী করবেন তা বিজেপি বিধায়কেরা নির্দিষ্ট সময় আপনাদের জানিয়ে দেবেন। তাঁরা বেতন বৃদ্ধাশ্রমে দেবেন, না কোনও অনাথ আশ্রমে দান করবেন, না কোন সমাজ সেবামূলক কাজে ব্যয় করবেন তা নিয়ে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।”
গত ৭ সেপ্টেম্বরে বিধানসভায় নিজের বক্তব্য শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মন্ত্রী থেকে বিধায়ক সব স্তরেই ৪০ হাজার টাকা করে বেতন বৃদ্ধি করছে সরকার। সরকারের বেতন কাঠামো অনুযায়ী, বিধায়কদের বেতন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হল ৫০ হাজার টাকা। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীরা এত দিন মাসে ১০ হাজার ৯০০ টাকা করে পেতেন। এখন থেকে তাঁরা পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। এ ছাড়া, রাজ্যে যে পূর্ণমন্ত্রীরা আছেন, তাঁদের বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা। তাঁরা বেতন বাবদ এ বার থেকে ৫১ হাজার টাকা পাবেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং প্রতিমন্ত্রী, পূর্ণমন্ত্রীরা এত দিন ভাতা ইত্যাদি মিলিয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পেতেন। এ বার থেকে তাঁরা পাবেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।
কিন্তু ওই সিদ্ধান্তকে সমর্থন না করার কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিধায়কের ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি না।’’ যদিও, আইনগত কারণে এই বর্ধিত বেতন না নেওয়ার উপায় নেই বিজেপি বিধায়কদের। ইতিমধ্যে বিরোধী দলনেতা তাঁর বর্ধিত বেতন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে তাঁদের লড়াইয়ের জন্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।