— প্রতীকী ছবি।
বোনের পচাগলা দেহ আগলে ঠায় বসেছিলেন দাদা। দেহের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে গোটা পাড়ায়। তার পরেই পুলিশ এসে বোনের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া এ বার উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দাদা, বোন— দু’জনেই ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন।
উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ইছাপুর বিধানপল্লি। সেখানেই বাড়ি প্রাক্তন রাজ্য সরকারি চাকুরে বাবলু ঘোষের। বাবলুর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন তাঁর বোন কৃষ্ণা। বেশ কিছু দিন ধরেই ভাই, বোনের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। বুধবার রাত থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। তখন পাড়ার কয়েক জন ছেলে ওই বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ, বাবলু তাঁদের তাড়া করে ভাগিয়ে দেন। এর পর খবর যায় পুলিশে। নোয়াপাড়া থানার পুলিশ এসে বাড়িতে ঢুকে দেখে, পচাগলা অবস্থায় পড়ে রয়েছেন কৃষ্ণা। দেহ উদ্ধার করার পর আটক করা হয় বাবলুকে। তাঁকে আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ভাই, বোন— দু’জনেই ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন। বোনের মৃত্যু হলে দাদা তাঁকে আগলে বসেছিলেন বা়ড়িতেই। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই দেহে পচন ধরতে শুরু করে। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। সেই দুর্গন্ধ পেয়েই সন্দেহ হয় পাড়ার লোকেদের। খবর যায় পুলিশে। নোয়াপাড়া থানা পচাগলা অবস্থায় দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এলাকার কাউন্সিলর প্রদীপ বসু বলেন, ‘‘বাবলু দা উঁচু পদে রাজ্য সরকারি চাকরি করতেন। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে চাকরি করতে যেতেন না। যত দূর আমার মনে পড়ছে, পেনশনের ব্যাপারটিও সেট্ল করতে পারেননি। বোনকে নিয়েই থাকতেন। আমাকে প্রতিবেশীরা ফোন করে খবর দেয়। আমি তার পর পুলিশে ফোন করি। কত দিন আগে বোনের মৃত্যু হয়েছে তা বলতে পারব না। তবে, আন্দাজ করছি বেশ কয়েক দিন আগেই ঘটেছে ঘটনাটি।’’
প্রতিবেশী সৌমি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেশ কয়েক দিন ধরেই ওই বাড়ির কাউকে বাইরে দেখতে পাচ্ছিলাম না। ভাই-বোন কারও কোনও রোজগার ছিল না। ওঁদের এক দিদির টাকায় চলত। পাড়ায় কোনও দিন কারও সঙ্গে মিশতে দেখিনি। বেশ কিছু দিন ধরে দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম। আজ জানতে পারলাম এই কাণ্ড!’’