প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত রাখি বিশ্বাস। বাগদা থানার ঘটনা। নিজস্ব চিত্র।
বলিউড ছবি ‘ডলি কি ডোলি’ দেখেননি বাগদার দিহালদহ গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিৎ পাল। দেখলে হয় তো তাঁর জীবনের এত বড় বিড়ম্বনা খানিকটা এড়াতে পারতেন।
ছবিতে দেখানো ‘ডলি’-র চরিত্রটি একাধিক পুরুষকে বিয়ে করে পরদিনই তাঁদের বাড়ির টাকাপয়সা, গয়না হাতিয়ে নিয়ে ফেরার হয়ে যেত। ওই ছবির মতোই সঞ্জিৎও প্রতারিত হয়েছেন। কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে?
বিয়ের জন্য পাত্রীর সন্ধান করতে গিয়ে নদিয়ার চাকদহের এক ঘটক শান্তি বিশ্বাসের সঙ্গে পরিচয় হয় সঞ্জিতের। তার দেখানো ‘সুশীলা’ ও ‘ঘরোয়া’ নিঃসহায় পাত্রী রাখি বিশ্বাসের সঙ্গে গত ২০ এপ্রিল বিয়ে হয় সঞ্জিতের। ২২ তারিখ সকালে নতুন বউকে বাড়ির পাশে এক বাগানে দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলতে দেখেন তিনি। চুপিসারে তার পিছনে গিয়ে মোবাইল কেড়ে নিয়ে কানে লাগাতেই শুনতে পান, ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে কেউ বলছে, “ঢের হয়েছে... এবার গয়না, মালপত্র গুছিয়ে নিয়ে কেটে পড়।” তিনি ঘটক শান্তি বিশ্বাসের গলা চিনতে পারেন। সঞ্জিতের সন্দেহ হয়, তিনি কোনও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।
একে একে রাখির ফোনে সেভ করা বিভিন্ন নম্বরে ফোন করতে শুরু করেন সঞ্জিৎ। অমিত নামে সেভ করা একটি নম্বরে ফোন করতেই অন্য প্রান্তের পুরুষকণ্ঠ বলে ওঠেন, “কোথায় আছো? ফোন ধরছো না কেন?” পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে সেই ব্যক্তি নিজেকে রাখির স্বামী বলে দাবি করেন। তিনি জানান, তাঁর স্ত্রী কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। সঞ্জিৎ এবার বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। রাখিকে নানা প্রশ্ন করতে শুরু করেন তিনি। তাঁদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। খবর পেয়ে বাগদা থানার পুলিশ এসে দু’জনকে থানায় নিয়ে আসে।
থানায় পৌঁছে রাখি ও শান্তির নামে অভিযোগ জানান সঞ্জিৎ। পুলিশ শুক্রবার রাখিকে গ্রেফতার করে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠালে বিচারক তাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, নদিয়ার চাকদহের চৌগাছা এলাকার এক ব্যক্তিকে তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলে-সহ বিয়ে করেছিল রাখি। তারও আগে অন্য একজনের সঙ্গে সাত বছর সংসার করেছিল সে। এই ভাবেই বিভিন্ন এলাকায় বিয়ে করে সেই বাড়ি থেকে টাকাপয়সা ও গয়না হাতিয়ে চম্পট দিত রাখি। শান্তি বিশ্বাস তাকে ওই কাজে সহযোগিতা করত। তার খোঁজেও তল্লাশি শুরু হয়েছে। এদের নামে আরও কোনও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।