মেজাজ হারিয়ে শোভনদেবের ধাক্কা তৃণমূল নেতাকে। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে স্লোগান দিচ্ছেন মন্ত্রী নিজে। কিন্তু কর্মীদের ভাল করে গলাই শুনতে পাচ্ছিলেন না। মিছিলেও লোক কম। এ সব দেখে মেজাজ হারিয়ে ফেললেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলের প্রবীণ নেতা রাগে ধাক্কা মেরে বসলেন দলেরই এক নেতার বুকে। প্রথমে হকচকিয়ে গেলেন সেই নেতা। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে মিছিলে উপস্থিত কর্মীদের জোরে স্লোগান দিতে বললেন। কিন্তু শোভনের এমন আচরণ অন্তত প্রকাশ্যে কেউ আগে দেখেনি। হঠাৎ কেন এমনটা করলেন, তার ব্যাখ্যাও পরে দিলেন তৃণমূলের প্রথম বিধায়ক।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুর ঘোলা বিলকান্দা এলাকায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে প্রতিবাদ মিছিল বার করে তৃণমূল। তার নেতৃত্বে ছিলেন খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব স্বয়ং। তিনি স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘‘আমাদের টাকা দিতেই হবে... দিতেই হবে।’’ পাশে দাঁড়ানো তৃণমূলের ব্যারাকপুর-২ সমিতির সভাপতি প্রবীর রাজবংশীও মন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গে স্লোগান দিচ্ছিলেন। কিন্তু মিছিল থেকে জোরে আওয়াজ না পেয়ে খাপ্পা হয়ে যান শোভনদেব। পাশে দাঁড়ানো প্রবীরের বুকে ধাক্কা মারেন অতীতের ‘বক্সার’ শোভনদেব। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই... এই... সব ডেডবডি (অপশব্দ)।’’ শুনে প্রবীরও কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কেউ স্লোগান দিচ্ছিস না কেন?’’ মন্ত্রী জোড়েন, ‘‘এখানে কেউ জ্যান্ত মানুষ নেই।’’ শোভনদেবের ধমক খেয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন সবাই।
হঠাৎ কেন এমনটা করলেন? দলের কর্মীরা কি সক্রিয় নয়? প্রশ্ন শুনে শোভনদেব বলেন, ‘‘কথা হল, একটা লোক স্লোগান দিলে সবাই স্লোগান দেবে। আমাদের আরও ছেলে আসার কথা। যত লোক হয়েছে, তার চার ডাবল লোক আসার কথা। কয়েক জন ইতস্তত করছিল। এখন দেখুন কত বড় মিছিল হয়ে গিয়েছে। আর আমি স্লোগান চিরকালই দিয়ে এসেছি। এখনও দিচ্ছি।’’ এ কথা বলেই শোভন হাত তুলে স্লোগান দেন, ‘‘অভিষেক ব্যানার্জি জিন্দাবাদ...’’ মিছিল থেকে ভেসে আসে ‘জিন্দাবাদ’ প্রতিধ্বনি। শোভন আবার স্লোগান দেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ।’’
তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব অবশ্য বলছেন শোভনদেবকে তাঁরা এমন মেজাজে আগে দেখেননি। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠার সময় থেকে দলের সঙ্গে তিনি। তৃণমূলের প্রথম বিধায়ক শোভনদেব এক সময় বক্সিং করতেন। তবে মন্ত্রীর ঠেলা খাওয়া সেই তৃণমূল নেতা কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।