উপেক্ষিত: এমনই ফাঁকা পড়ে বাজার চত্বর। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
কৃষকদের সুবিধার কথা ভেবে, সব কৃষিজাত পণ্য এক ছাদের তলায় কেনাবেচা করতে তৈরি হয়েছিল কৃষক বাজার। কিন্তু তৈরির তিন বছর পেরিয়েও পড়েই রইল বারুইপুরের সেই কৃষক বাজার। উদ্বোধনের পরেও বাজার পুরোদমে চালু না হওয়ার পিছনে প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিকেই আঙুল উঠছে।
বারুইপুর ও সংলগ্ন এলাকা মূলত কৃষিপ্রধান। নানা ধরনের আনাজ, ফল, খাদ্যশস্যের চাষ হয় সেখানে। সেই সব জিনিস আশেপাশের বিভিন্ন বাজারে গিয়ে বিক্রি করেন কৃষকেরা। কিন্তু তাঁরা ন্যায্য দাম পান না বলে অভিযোগও ওঠে। সে কারণেই কৃষক বাজারের পরিকল্পনা করে প্রশাসন। ঠিক হয়, শস্য, আনাজ এবং ফল চাষিরা ওই বাজারেই তাঁদের পণ্য বিক্রি করবেন। সেখান থেকে তা কিনে নেবেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বিভিন্ন বাজারে ঘুরে বিক্রির ঝক্কি কমবে কৃষকদের। পাশাপাশি ফড়েদের দাপট কমিয়ে বিভিন্ন পণ্যের দামের উপর নজরদারি রাখতে পারবে প্রশাসন।
সেই উদ্দেশ্যে বছর পাঁচেক আগে বারুইপুর ফুলতলার কাছে দু’একর জায়গায় কৃষক বাজার তৈরি শুরু হয়। ২০১৬ সালে বাজারের উদ্বোধনও হয়। বছর তিনেক কেটে গেলেও কার্যত পড়ে বাজার। বেশ কয়েক বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার চাষিদের থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান কিনছে সরকার। বারুইপুরের এই কৃষক বাজারে স্থানীয় কৃষকদের থেকে ধান কেনার কাজ চলে। পাইকারি বাজারের পাশাপাশি খুচরো বিক্রির জন্যও কয়েকটি দোকান হয়েছিল। সেই দোকানগুলির কয়েকটি চালু হয়েছে। কিন্তু এত বড় কৃষক বাজারের বাকি অংশে কাজই হচ্ছে না!
স্থানীয় কৃষকদের মতে, এ ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যর্থতাই দায়ী। ফুলতলা সংলগ্ন ওই জায়গা বাজার তৈরির উপযুক্ত নয় বলে দাবি তাঁদের। স্থানীয় চাষি গোপাল হালদার বলেন, ‘‘সরকার ভর্তুকি দিয়ে ধান কেনে। তাই চাষিরা এখানে ধান বিক্রি করতে আসেন। কিন্তু ফল-আনাজ বিক্রি করে লাভ না হওয়ায় কাছের বাজারেই যেতে হচ্ছে।’’
বাজার তৈরিতে প্রশাসনিক ব্যর্থতার কথা মেনে নিচ্ছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘কৃষক বাজারটি তৈরির জন্য জায়গা নির্বাচনে আরও সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। কাছেই রামনগর, সীতাকুণ্ডু, সুর্যপুরে বড় বাজার রয়েছে। স্থানীয় চাষিরা সেখানে যেতেই অভ্যস্ত।’’
এত বড় বাজারের তা হলে ভবিষ্যৎ কী? শ্যামসুন্দরের কথায়, ‘‘কৃষকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। তা ছাড়া এখানে হিমঘর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা হলে আনাজ ব্যবসায়ীদের বড় অংশ আসতে উৎসাহী হবেন।’’