ফাইল চিত্র।
বার বার প্রচার চালানো হলেও বন্ধ হয়নি অবৈধ প্লাস্টিকের ব্যবহার। বরং বেশ কিছু বিক্রেতা এখনও ৭৫ মাইক্রনের কম ঘনত্বের প্লাস্টিক ব্যবহার করে চলেছেন, অভিযোগ খোদ বরাহনগর পুরসভার। তাই শেষমেশ জরিমানা ধার্য করা শুরু করলেন পুর কর্তৃপক্ষ। শনিবারই সেই জরিমানা বাবদ আদায় হয়েছে কয়েক হাজার টাকা।
বরাহনগরের ৩৪টি ওয়ার্ডে রয়েছে ১২টি বাজার। শুক্র ওশনিবার মিলিয়ে দু’টি বাজারে আচমকা হানা দেন পুরকর্তারা। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বেণী কলোনি বাজার এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি কলোনি বাজারে গিয়ে দেখা গেল, বেশ কিছু বিক্রেতা অবৈধপ্লাস্টিক ব্যবহার করছেন। শনিবার নেতাজি কলোনি বাজারের সাত জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে সাড়ে তিন হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে পুরসভা। আর ওই দুই বাজার মিলিয়ে ২৩ জন ব্যবসায়ীকে শোকজ়নোটিস ধরানো হয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষণার পরেও কেন ওই প্লাস্টিক ব্যবহার করা হচ্ছে, তার লিখিত উত্তর সাত দিনের মধ্যে পুরসভায় জমা করতে হবে। পুরসভাসূত্রের খবর, দু’দিনে দু’টি বাজার মিলিয়ে প্রায় ১৮ কেজি অবৈধ প্লাস্টিকের ব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, যাঁদের জরিমানা করা হয়েছে,তাঁদের সেখানেই রসিদ কেটেদেওয়া হচ্ছে।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘বার বার করে সচেতন করা সত্ত্বেওঅনেকেই সরকারি নির্দেশিকার বিষয়টি উপেক্ষা করছেন। তাই কড়া মনোভাব না নিলে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আচমকা হানা এবং জরিমানা চলতেই থাকবে।’’ পর্যবেক্ষণেআরও একটি বিষয় উঠে এসেছে, ৭৫ মাইক্রনের বেশি ঘনত্বের দাবি করে কিছু ব্যবসায়ী যে প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন, তাতে গরমিল রয়েছে। দিলীপনারায়ণ জানাচ্ছেন, ওই কারচুপি ধরার জন্যপ্লাস্টিকের ঘনত্ব মাপার যন্ত্র কিনবে বরাহনগর পুরসভা।
পুরকর্তারা দাবি করেছেন, বরাহনগরের সমস্ত বাজারেপ্লাস্টিক বর্জনের সচেতনতা গত ফেব্রুয়ারি থেকেই চালানো হয়েছিল। এক কর্তার কথায়, ‘‘১ জুন থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কথা ভেবে প্রচার চালানো হয়েছিল।কিন্তু তা হয়নি। আরও এক মাস প্রতিটি বাজারে গিয়ে দোকান ধরে ধরে বোঝালেও এখনও অনেকে উপেক্ষা করছেন।’’
গত দু’দিন ধরে ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাজারেহানা দিচ্ছেন জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ অঞ্জন পালও। পুরকর্তাদের পর্যবেক্ষণ, কিছু ব্যবসায়ী এক ধরনের কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করছেন, যার মধ্যে প্লাস্টিকের উপাদান রয়েছে। ওই সমস্ত ব্যবসায়ীকে সতর্ক করা হয়েছে। অঞ্জনের কথায়,‘‘এত বার বোঝানোর পরেও যদিকেউ না শোনেন, তা হলে তিনি জরিমানা দেবেন। শোকজ়ের সদুত্তর দিতে না পারলে পুরসভা ব্যবস্থানেবে। ‘নির্মল সাথী’ কর্মীদেরওপ্রতিটি বাজারে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’ শুধু বিক্রেতাই নয়। ক্রেতাদের হাতেও অবৈধ প্লাস্টিক দেখলে, তাঁদেরও জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বরাহনগরপুর কর্তৃপক্ষ।
অন্য দিকে, কামারহাটি পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১-৭ নম্বরে এখনও সচেতনতার অভাব পর্যবেক্ষণ করে সেখানকার সব কাউন্সিলরকে নিয়ে এ দিন এলাকায় বৈঠক করেন পুরকর্তারা।