সাফল্যে উজ্জ্বল আমতলার অর্ক মণঅডল। নিজস্ব চিত্র
সর্বভারতীয় পরীক্ষায় জয়জয়কার বাংলার। ইউপিএসসি-এর ইন্ডিয়াল স্ট্যাটিসটিক্যাল সার্ভিস (আইএসএস) পরীক্ষায় দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দা অর্ক মণ্ডল(২৪)। অর্কর এই সাফল্যে উৎফুল্ল তার পরিবার। অর্ককে শুভেচ্ছা জানাতে ভিড় জমেছে তাঁর বাড়িতে।
সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষামন্দিরের প্রাক্তন ছাত্র অর্ক কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করেছেন। গত বছরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাশিবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর হয়েছেন তিনি। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বরাবরই অঙ্কে ভাল ছাত্র হিসেবেই পরিচিত অর্ক। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার সময় থেকেই রাশিবিজ্ঞানের উপর আলাদা করে ভালবাসা তৈরি হয়। তার পর থেকে রাশিবিজ্ঞান নিয়েই পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন তিনি। গত বছর স্নাতকোত্তর পড়ার সময়ই আইএসএস পরীক্ষা দেন অর্ক। তবে সে বার তাঁকে ফিরতে হয় খালি হাতে। টানা এক বছরের অধ্যাবসায় অবশেষে তাঁকে সাফল্য এনে দিল।
এ বছরের পরীক্ষায় দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন তিনি। সাফল্যে খুশি অর্ক বলছেন, ‘‘রাশিবিজ্ঞান নিয়েই এগোতে চেয়েছিলাম। শেষ কয়েক বছর ওটাই মন দিয়ে পড়তাম। ভেবেছিলাম সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কিছু একটা করব। আমার শিক্ষক এবং বাবা-মায়ের সাহায্যে অবশেষে আইএসএস পাশ করতে পেরেছি।’’
অর্কর বাবা তারকনাথ মন্ডল পেশায় চিকিৎসক। মা কাকলি স্কুল শিক্ষিকা। দুই ভাইবোনের মধ্যে অর্ক ছোট। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি তুলতে ভালবাসে অর্ক। সময় সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যে কবিতাও লেখেন। আইএসএস পরীক্ষার জন্য গত বছর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে পড়াশোনার প্রয়োজনে তিনি ইন্টারনেটের সাহায্য নিতেন। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আলাদা করে কোনও কোচিং সেন্টারে যাননি তিনি। নিজে নিজেই শান দিয়েছেন পড়াশোনায়।
অর্কর বাবা তারকনাথ মন্ডল বলছেন, ‘‘ছেলে মুখ গুঁজে পড়ত। পড়াশোনার জন্য নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। ওর অধ্যাবসায়ই ওকে সাফল্য এনে দিয়েছে।’’ এ বছর ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিসে মোট শূন্য পদ ছিল ১১টি। সেই ১১ জনের মেধাতালিকার মধ্যেই দ্বিতীয় স্থানে অর্ক। তিনি আরও বলছেন, ‘‘আমার স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এ বার দেশ এবং রাজ্যের জন্য কাজ করতে চাই। আশা করি সেই সুযোগই পাব।’’ অর্কর সাফল্যে তাঁর স্কুলেও খুশির হাওয়া। সাতগাছিয়ার বিধায়ক মোহন নস্কর বলেন, ‘‘অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে আমাদের এলাকার পড়ুয়া সর্বভারতীয় পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।’’