ফাইল চিত্র।
ভাটপাড়া পুরসভা নিয়ন্ত্রিত সমবায় ব্যাঙ্কে হানা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করল ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। বুধবার ওই ব্যাঙ্কে তল্লাশি চালিয়ে কয়েকটি ঠিকাদারি সংস্থার অ্যাকাউন্টের নথি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়।
সম্প্রতি সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির এক সদস্য এ ব্যাপারে কমিশনারেটে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ। তিনি ভাটপাড়ার পুরপ্রধান থাকার সময়ে তছরুপ হয়েছে বলে অভিযোগ।
অর্জুন অবশ্য এর পিছনে ষড়যন্ত্রই দেখছেন। তিনি জানান, বিনা নোটিসে পুলিশি-হানা নিয়ে তিনি হাইকোর্টে মামলা ঠুকবেন। বিজেপির দাবি, এর পিছনে রাজনীতি রয়েছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, আইন অনুযায়ীই তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের গতি-প্রকৃতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে গোয়েন্দা বিভাগ।
ভাটপাড়া পুরসভার অধীনে একটি সমবায় ব্যাঙ্ক রয়েছে। মূলত কর্মচারীদের টাকাতেই চলে ওই ব্যাঙ্ক। পুরসভার কিছু ঠিকাদারেরও অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেখানে। কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্থ শুরু হয়েছে। যত দিন, যে ভাবে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, তত দিনই তদন্ত চলবে। এ দিন ব্যাঙ্কে গিয়ে ছ’টি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টের ফাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।’’
কী ভাবে হয়েছে দূর্নীতি?
অভিযোগ, এই পুরসভারই কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের কাজের জন্য ঋণ দেওয়া হত। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও ঠিকাদার কাজের জন্য টেন্ডার জমা করলে ওই ব্যাঙ্কের কাছে ঋণের আবেদন করতেন। ব্যাঙ্ক তাদেঁর শর্ত দিত, তাঁরা কাজের বরাত পেলে ঋণ দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁদের ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট করত হবে। কাজের জন্য যে টাকা পুরসভা থেকে তিনি পাবেন, তা যেন সেই অ্যাকাউন্টেই জমা পড়ে।
অভিযোগ, এই নিয়মকে হাতিয়ার করেই বেশ কিছু ঠিকাদারকে কাজের বরাত এবং ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরে তাঁরা হয় চেকে বা অন্য অ্যাকাউন্টে কাজের টাকা নিয়েছেন। অথচ, সমবায় ব্যাঙ্কের ঋণও শোধ করেননি। তার ফলে রুগ্ণ হয়ে পড়েছে ব্যাঙ্ক। অর্জুন বলেন, ‘‘পুলিশ বিনা নোটিসে ব্যাঙ্কে হানা দিয়েছে। নিয়ম ওরাই ভেঙেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব। আর লেনদেনে কোনও অনিয়ম হয়নি। ঠিকাদারদের ঋণ দেওয়া যাবে না, এমন কোনও নিয়ম আছে নাকি?’’