নিজস্ব চিত্র
৬১ বছরের বৃদ্ধের দেহ বাড়িতে এনেছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু ‘মৃত’ অবস্থা থেকেই নাকি চোখ খুলে চেয়েছেন সেই ব্যক্তি। তবে প্রাণ বেশিক্ষণ টেকেনি। ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই আবারও মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছেন তিনি। বারসতের বনমালীপুরের এক পরিবার এমনই এক ঘটনার দাবি করেছে। আর সেই বাঁচা মরার তিন অঙ্কের এক নাটকের খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
বারাসত প্রিয়নাথ স্কুলের করণিক ও বনমালীপুর এলাকার সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব ৬১ বছরের কৃষ্ণচন্দ্র কুন্ডু শনিবার সকাল দশটা নাগাদ আচমকা বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন । বারাসতের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তিন ঘন্টার আগেই তাঁর দেহ বাড়িতে আনেন পরিবারের লোকের । সদ্যবিবাহিতা কন্যার শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার অনুষ্ঠান পর্ব শেষ হওয়ার মধ্যেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে পরিবার। আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনা এলাকার মানুষকে শোকস্তব্ধ করে দেয়।
দেহ আনার পরেই মৃতদেহের উপর কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, তখনই তাঁরা লক্ষ্য করেন মুহূর্তের জন্য চোখ খুলে তাকিয়েছেন, ‘মৃত’ কৃষ্ণকান্ত । বাড়ির লোক মনে করতে থাকেন, তখনও প্রাণ রয়েছে তাঁর শরীরে। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসাত জেলা সদর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা বলেন, পথেই মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণচন্দ্রর। ক্ষণিকের আশার আলো নিভে যায়। তবে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা মনে করছে, ঠিক মতো চিকিৎসা হলে প্রাণে বেঁচে যেতেন বৃদ্ধ। তাঁরা সকলেই মনে করছেন, বেসরকারি হাসপাতালে ঘোষণা মতো মৃত্যু হয়নি কৃষ্ণচন্দ্রের। তবে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনোরকম অভিযোগ দায়ের করেননি মৃতের পরিবার। তাঁরা এ নিয়ে আর জলঘোলা করতে চান না ।
মৃত্যুর পর হাতপায়ের নড়াচড়া বা চোখের পাতা পড়ার মতো ঘটনা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। এমনটাই বলছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। তাঁর কথায়, ‘‘রাইগর মর্টিসের কারণে এমন হতেই পারে। মৃত্যুর পর পেশির সংকোচন বা প্রসারণের ফলে এটি হয়।’’ বহু ক্ষেত্রেই এই লক্ষণগুলোর কারণে রোগীর নিকটজন ভুল বোঝেন বলেও জানাচ্ছেন তিনি। ‘‘এমনও উদাহরণ আছে, চিতায় শুইয়ে দেওয়ার পরে মৃত ব্যক্তি উঠে বসেছেন। তাঁকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। পরে দেখা গিয়েছে, তিনি মৃতই’’, বলছেন সুবর্ণ।