ফাইল চিত্র।
কালনা থেকে ক্যানিং।
প্রায় দেড়শো কিলোমিটার পথ উজিয়ে সাপে কাটা রোগী এলেন চিকিৎসার জন্য!
দুই হাসপাতাল ঘুরে গিয়েছিলেন গুনিনের কাছে। প্রাণ যায় যায় অবস্থা। শেষে এক আত্মীয়ের পরামর্শে হাসপাতালে এলেন চিকিৎসা। তা-ও দেড়শো কিলোমিটার পথ উজিয়ে।
বছর পঞ্চাশের সন্ন্যাসী বিশ্বাস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রওনা দিয়েছিলেন বর্ধমানের কালনা থেকে। রেলপথে ক্যানিংয়ে পৌঁছেছেন শুক্রবার সকাল ১০টা। সব মিলিয়ে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার পথ।
তবে আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক সমর রায় বলেন, “আরও বেশি দেরি হলে রোগীকে বাঁচানো মুশকিল হত। তবে সাপের কামড়ের চিকিৎসা যে সরকারি হাসপাতালেই সম্ভব, সেটা ওঁর পরিজন বুঝেছিলেন বলেই এ যাত্রায় রক্ষা পেলেন।”
বুধবার সন্ধ্যায় চন্দ্রবোড়া সাপের কামড় খান সন্ন্যাসী। বর্ধমান জেলার কালনা থানার পূর্ব সাতগাছিয়া এলাকার বাসিন্দা সন্ন্যাসীকে পরিবারের সদস্যেরা প্রথমে কালনা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা প্রাথমিক ভাবে দশটি এভিএস দেন। পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
সেখানে না নিয়ে গিয়ে সন্ন্যাসীকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যেরা। সেখান থেকে সন্ন্যাসীকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে। একের পর এক হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত হওয়ায় সন্ন্যাসীর বাড়ির লোকজন এ বার হাজির হন স্থানীয় এক গুনিনের কাছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সেখানে বেশ কয়েক ঘণ্টা চলে ঝাড়ফুঁক। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বাসন্তীর নির্দেশখালিতে গোলাপি সানা নামে সন্ন্যাসীর এক আত্মীয় থাকেন। তিনি বিষয়টি জানতে পেরে সন্ন্যাসীকে ক্যানিং হাসপাতালে আনার পরামর্শ দেন। বর্ধমান থেকে ক্যানিংয়ে রওনা দেন সকলে।
যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার কর্মী দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। সাপে কাটা রোগীকে সরকারি হাসপাতালে আনার জন্য লোককে বোঝাচ্ছি। মানুষ ধীরে ধীরে সচেতন হচ্ছেন।’’