শুভেন্দু অধিকারী তাঁর আতঙ্কে ভুগছেন বলে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ উঠতেই কটাক্ষ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন। এমনকি, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন বলেও পরামর্শ দিলেন। যদিও এ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর কোনও প্রতিক্রিয়া এই প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি তৃণমূল সরব হয়েছে ‘অভিষেক আতঙ্কে’ শুভেন্দু ভুগছেন বলে। তাঁর মানসিক সুস্থতা কামনা করে শুভেন্দুর বাড়িতে গোলাপ ফুল ও ‘গেট ওয়েল সুন’ লেখা কার্ড পাঠাচ্ছেন দলের ছাত্র-যুবরা। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর ‘মানিসক সুস্থতা’ নিয়ে অভিষেকও যে ভাবে কটাক্ষ করলেন, তাতে দুই নেতার মধ্যে সংঘাতের আঁচ আরও বাড়ল।
ইতিমধ্যেই ‘সুস্থতা’ কামনার ওই সব বার্তা পেয়ে শুভেন্দু সংশ্লিষ্ট প্রেরকদের কটাক্ষ করেছেন বলে মঙ্গলবার দাবি করেছেন অভিষেক। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক দাবি করেন, যাঁরা ওঁকে সুস্থতা কামনা করে মেসেজ পাঠিয়েছেন, তাঁদের আক্রমণ করছেন শুভেন্দু। এর পরই তিনি বলেন, ‘‘ওই লোকটার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের দরকার।’’
বিরোধী দলনেতা সকালে এক রকম আর বিকেলে অন্য কথা বলেন বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক। নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ককে বিঁধে তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক বাড়ির বাইরে বেরোলেই আতঙ্ক। ও চায় আমি চুপ করে বাড়িতে বসে থাকি। নিজেকে কী ভাবে!’’
শুভেন্দুকে কটাক্ষ করতে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বীরবাহা হাঁসদাকে নিয়ে বিরোধী দলনেতার করা ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের প্রসঙ্গও টেনেছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা জঙ্গলকন্যাকে বলেছেন জুতোর তলায় রাখি।’’ এ কথা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে রাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গও তোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মন্ত্রীর মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। বীরবাহাকে নিয়ে উনি (শুভেন্দু) যে মন্তব্য করেছেন, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপি সভাপতি ক্ষমা চাইতে পারবেন?’’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে অখিলের মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় সারা দেশে। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রীর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে বীরবাহাকে নিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্যের বিষয়টিও তুলে ধরেছিলেন তিনি। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে অখিলের মন্তব্যকে যখন হাতিয়ার করেছে বিজেপি, তখন পাল্টা বীরবাহাকে নিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্যকে সামনে রেখে পদ্মশিবিরকে আক্রমণ করছে জোড়াফুল শিবির। অভিষেকও এ বার সরব হলেন।
নারদ-কাণ্ডের ফুটেজে শুভেন্দুকে টাকা নিতে দেখার প্রসঙ্গ তুলেও আক্রমণ করেন অভিষেক। সেই সঙ্গে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ এ-ও বলেন যে, তাঁকে কিন্তু কোনও টাকা নিতে দেখা যায়নি। শুভেন্দুকে ‘দু-কান কাটা’, ‘নির্লজ্জ’ বলেও আক্রমণ করেছেন অভিষেক। একই সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ জানিয়ে দেন, তিনি ব্যক্তি আক্রমণ করেন না। এ লড়াই তাঁর বিজেপির বিরুদ্ধেই।