মঙ্গলবার দুই আদিবাসী পরিবারে মমতা ও সুকান্ত। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামে গেলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নতুন নয়। আবার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মধ্যহ্নভোজের মাধ্যমে জনসংযোগ বিজেপির বরাবরের কৌশল। কিন্তু রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই দুই নজির নতুন করে চোখ টানল মঙ্গলবার।
এ দিন ছিল আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার জন্মদিন। বাংলায় রাজ্য সরকার এই দিনটায় সকলের জন্য ছুটি ঘোষণা করে আদিবাসীদের প্রতি আগেই বার্তা দিয়েছে। ফি বছরের মতো এ বারেও এই দিনে নানা কর্মসূচি ছিল তৃণমূলের এবং রাজ্য সরকারের। তারই অঙ্গ হিসাবে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে ঝাড়গ্রাম গিয়েছিলেন মমতা। সভা মিটতে ফেরার পথে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ঢুকে পড়েন আদিবাসী গ্রামে। মাঝে একটি তেলেভাজার দোকানে গিয়ে নিজে তো চপ খানই, সঙ্গীদের নিজে হাতে তুলে তুলে খাওয়ান। আর আদিবাসী গ্রামে ঢুকে একটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় একটি মাস তিনেকের শিশুকে কোলে তুলে নেন। সেই ছবি টুইট করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষেও।
অন্য দিকে, রাজ্য বিজেপিও একটি ছবি ছড়িয়ে দিয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার অন্য প্রান্তে গোপীবল্লভপুরে এ দিন বিরসা মুন্ডার জন্মদিন পালনের কর্মসূচিতে যান দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে গিয়ে সভার পাশাপাশি একটি আদিবাসী পরিবারের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছবিও তোলেন। একটি ছবিতে দেখা যায় এক আদিবাসী বালিকা সুকান্তের কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে।
দুই রাজনীতিকের এই আদর দেখে অবশ্য অন্য প্রশ্নও উঠছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। মন্ত্রীর অপসারণ চায় বিজেপি। অন্য দিকে, দলের পক্ষে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই রাজ্যের একটা বড় অংশে আদিবাসী ভোট সব রাজনৈতিক দলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। তাই দুই দলের দুই নেতৃত্বের একই দিনে আদিবাসী পরিবারের সঙ্গে সংযোগে রাজনৈতিক গন্ধ থাকাটাকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।