সুব্রত রপ্তান। — নিজস্ব চিত্র।
টাকি গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছিলেন। পরিবারে আর্থিক অনটনের জন্য দরকার ছিল একটা কাজের। শ্রমিকের কাজ জোগাড় করে সুব্রত রপ্তান (২৪) চলে যান ভিন্ রাজ্যে। ছেলে কাজ পাওয়ায় পরিবারের কিছুটা আর্থিক সুরাহা হয়েছিল। কিন্তু এখন সব শেষ। বুধবার নাগাদ সুব্রতের নিথর দেহ কফিনবন্দি হয়ে ফিরবে সন্দেশখালির গ্রামের বাড়িতে।
মিজোরামে পাথর খাদানে ধসে মৃত্যু হয়েছে ৮ জন শ্রমিকের। আরও কয়েকজন নিখোঁজ। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন সন্দেশখালির ঢোলখালি গ্রামের বাসিন্দা সুব্রতও। বাড়ির একমাত্র ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার।
পরিবার সূত্রের খবর, সুব্রত বিএ পাস করেন কয়েক বছর আগে। আগে ঝাড়খণ্ডে পাথর খাদানে কাজ করেছেন। দুর্গাপুজোয় বাড়ি এসেছিলেন। ভাইফোঁটার পরে ফের কাজে যান। এবার গন্তব্য ছিল মিজোরাম। সুব্রতের বাবা শ্যামল তামিলনাড়ুতে শ্রমিকের কাজ করেন। দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে মা মালতি একাই থাকেন। সোমবার সন্ধ্যায় সুব্রতের এক বন্ধু বাড়িতে মৃত্যুসংবাদ দেন। সুব্রতের কাকিমা অনিমা রপ্তান বলেন, ‘‘পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় কোনও কাজ না পেয়ে সুব্রত শ্রমিকের কাজে যেতে বাধ্য হয়েছিল। দেহ বাড়িতে আনার ক্ষমতাও নেই ওঁদের।’’ সুব্রতের দিদি মিনু মৃধা বলেন, ‘‘এবার ভাইফোঁটায় খুব আনন্দ করেছিলাম। কিন্তু এটাই যে শেষ ভাইফোঁটা, তা বুঝিনি।’’
ভিন্ রাজ্যে এই দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার সুব্রতের বাড়িতে আসেন সন্দেশখালি পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ মল্লিক, সন্দেশখালি ২ যুগ্ম বিডিও অর্ক মান্ডি। বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন উদ্যোগ করেছে, দেহ বিমানে এ রাজ্যে আনার। পরিবারটি যাতে ক্ষতিপূরণ পায়, তা প্রশাসন দেখছে।’’