জামাল সর্দার। —ফাইল চিত্র
জামালউদ্দিন সর্দার ওরফে জামালের বাড়ির সুইমিং পুল থেকে কচ্ছপ উদ্ধারে তৎপর হল বন দফতর। তবে কচ্ছপ উদ্ধার অভিযান সফল হয়নি। জামালের প্রাসাদোপম বাড়ির সদর দরজায় তালা লাগানো থাকায় প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ফিরে যেতে হয় বন দফতরের কর্মীদের। তবে বিভাগীয় বন আধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে জামালের বাড়িতে ফের অভিযানে যাবে বন দফতরের দলটি।
বুধবার রাত ১০টা নাগাদ ডিএফও-র নির্দেশে বারুইপুর রেঞ্জ অফিস থেকে ছয় সদস্যের একটি দল সোনারপুরে জামালের বাড়িতে পৌঁছয়। দলের সদস্যদের হাতে ছিল জাল এবং কচ্ছপ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যান্য সামগ্রী। কিন্তু সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দলটি অপেক্ষা করার পরেও সদর দরজার তালা খোলা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কচ্ছপটিকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
বুধবার রাতে হাতে টর্চ নিয়ে ছয় সদস্যের দলটি সাদ্দামের বাড়ির সামনে যায়। ভিতরে টর্চের আলো ফেলে এক জন জিজ্ঞাসা করেন, ভিতরে কেউ আছেন কি না। কিন্তু উল্টো দিক থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। পুলিশকে জানিয়ে দলের সদস্যেরা জামালের বাড়িতে এসেছিলেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে এক সদস্য বলেন, “পুলিশের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়েছিল। তারা বলে আপনারা যান। আমাদের টিম ওখানে রয়েছে। কিন্তু কারও দেখা পেলাম না। গেটেরও তালা বন্ধ।”
সালিশি সভার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শিকলে বেঁধে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে সোনারপুরের ‘তৃণমূল কর্মী’ জামালের বিরুদ্ধে। ‘পলাতক’ জামালের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরা একের পর এক অভিযোগ তুলছেন। তার মধ্যে তৃণমূল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে। শিকলে বেঁধে মারধরের ঘটনায় মুজিদ খাঁ এবং অরবিন্দ সর্দার নামে দু’জনকে মঙ্গলবার পাকড়াও করেছে পুলিশ। বুধবার ধৃতদের বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। তার মধ্যেই সামনে এসেছে জামালের সুবিশাল বাড়ির ছবি। সেই বাড়ির পাশে আরও একটি বাড়ি রয়েছে। সেই বাড়ির ভিতরে রয়েছে সুইমিং পুল। পাশের জলাভূমিতে ঘুরে বেড়ায় কচ্ছপ। শখ করে মাসখানেক আগেই নাকি প্রাণীটিকে নিয়ে এসেছিলেন জামাল।
বুধবারই কচ্ছপকাণ্ডে জামালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দেয় বন দফতর। ডিএফও জানান, জামালের বাড়িতে যে কচ্ছপ দেখা গিয়েছে, তার বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘ইন্ডিয়ান সফ্ট শিল্ড টার্টল’। ওই কচ্ছপ বাড়িতে রাখার জন্য সর্বোচ্চ তিন থেকে সাত বছরের জেল এবং ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।