থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে সাদ্দাম সর্দারকে। —নিজস্ব চিত্র।
সাদ্দাম সর্দার গ্রেফতার। কুলতলির ঝুপড়িঝাড়ার বানীরধল এলাকা থেকে গ্রেফতার হলেন কুলতলিকাণ্ডের মূল পাণ্ডা। বুধবার রাতে একটি মাছের ভেড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সাদ্দামের পাশাপাশি ওই ভেড়ির মালিক তথা কুলতলির সিপিএম নেতা মান্নান খানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই নিয়ে মোট চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবারই সাদ্দামকে আদালতে হাজির করতে পারে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত সোমবার পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গিয়ে সিপিএম নেতা মান্নানের মাছের ভেড়িতে আশ্রয় নেন সাদ্দাম। সেই ভেড়ির আলাঘর থেকেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। গ্রেফতার করা হয় মান্নানকেও। কুলতলি থানার পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে বুধবার রাতে মাছের ভেড়ি ঘিরে আলাঘর থেকে গ্রেফতার করে সাদ্দাম ও মান্নানকে। সাদ্দামের ভাই সাইরুল এখনও অধরা।
কুলতলির জালাবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েতের পয়তারহাটের বাসিন্দা সাদ্দামের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই প্রতারণার অভিযোগ। এর আগেও এ রকম একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে এক বার গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত সোমবার সাদ্দামের পয়তারহাটের বাড়িতে অভিযানে যায় পুলিশ। সাদ্দামকে ধরে ফেলে তারা। এর পরেই বাড়ি এবং আশপাশের মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সাদ্দামের ভাই সাইরুল পুলিশকে নিশানা করে গুলিও চালান বলে অভিযোগ। এই সুযোগে পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যান সাদ্দাম এবং সাইরুল। সাদ্দামের স্ত্রী রাবেয়া সর্দার এবং মাসুদা সর্দার নামে আরও এক মহিলাকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ গ্রেফতার করা হয়।
এর পরেই সাদ্দামের খোঁজে এলাকায় শুরু হয় তল্লাশি। সেই সময় তাঁর শোয়ার ঘরের নীচে একটি সুড়ঙ্গ আবিষ্কার করে পুলিশ। সেটি বাইরে একটি খালের সঙ্গে যুক্ত। কিছু দূর এগিয়েই এই খাল গিয়ে মিশেছে মাতলা নদীতে। ফলে কোনও রকম বেগতিক বুঝলে প্রতারণার কারবারে অভিযুক্তদের পক্ষে এই সুড়ঙ্গপথে পালানো অনেকটাই সহজ। সুড়ঙ্গ থেকে এক বার খালে নেমে এলেই, ডিঙি নৌকায় চেপে সবার অলক্ষে মাতলা নদী হয়ে পালিয়ে যাওয়া যেতে পারে। ওই রাস্তা দিয়েই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়েছিলেন সাদ্দাম। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। বুধবার রাতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ল কুলতলি প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা।