জিয়ারুল হক ও ফরিদউদ্দিন মোল্লা
কাজের টোপ দিয়ে এক যুবককে কুয়েতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই যুবকের পাসপোর্ট কেড়ে তাঁর বাড়িতে মুক্তিপণ চাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে তদন্তে নেমেছে বসিরহাট থানার পুলিশ। বসিরহাটের পিঁফার তেঁতুলতলার বাসিন্দা ফরিদউদ্দিন মোল্লা বসিরহাট কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে আইটিআই পাস করেছিলেন। এসি সারাইয়ের কাজ করতেন। মাস কয়েক আগে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় হাবড়ার নারায়ণপুরের বাসিন্দা জিয়ারুল হকের। ফরিদউদ্দিনের পরিবারের দাবি, জিয়ারুল বিদেশে মোটা টাকার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখায়। কুয়েতে যেতে রাজি হয়ে যান ফরিদউদ্দিন। মাসখানেক আগে জিয়ারুলের কথা মতো পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে কুয়েতে পৌঁছে যান ফরিদউদ্দিন। দিন তিনেক আগে মাকে ফোন করেন ওই যুবক। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, চাকরি-বাকরি কিছু জোটেনি। মরুভূমিতে উট-দুম্বা চরাতে হচ্ছে। খাবার-জলও মিলছে না ঠিকঠাক। এ ভাবে চলতে থাকলে বেশি দিন বাঁচার আশা নেই তাঁর। ফরিদউদ্দিন আরও জানান, তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশে ফিরতে চাইলে আড়াই লক্ষ টাকা দিতে হবে বলা হচ্ছে। ছেলের হাল শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রাবেয়া বিবি। বাবা আজিজুল ইসলাম মোল্লা বসিরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ শনিবার রাতে জিয়ারুলকে গ্রেফতার করেছে। রবিবার বসিরহাট আদালতের বিচারক তাকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ মনে করছে, কাজের টোপ দিয়ে বিদেশে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায় করার একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত সে। তার সঙ্গে বাংলাদেশ-সহ আরও কয়েকটি দেশের কয়েক জন জড়িত।
ফরিদউদ্দিনের মা জানিয়েছেন, বিদেশে যাওয়ার পর থেকে ছেলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগও করতে পারছিলেন না। ছেলে কেমন আছে জানতে চেয়ে জিয়ারুলকে ফোন করলেও সদুত্তর মেলেনি। ছেলেকে নিয়ে উদ্বেগে ছিল পরিবারটি। এরই মধ্যে হঠাৎ ফরিদউদ্দিনের ফোন আসে। ছেলে সমস্যার মধ্যে আছে জানতে পেরে আরও ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। ফরিদউদ্দিনকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে বসিরহাট থানার পুলিশ।