চিকিৎসকদের তৎপরতায় সুস্থ হয়ে উঠছেন ওই মহিলা। প্রতীকী ছবি।
বাগানে কাজ করতে গিয়ে বিষাক্ত কিছুর কামড় খান এক মহিলা। সাপে ছোবল মেরেছে ধরে নিয়ে ওঝার কাছে ছোটেন পরিবারের লোকজন। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ঝাড়ফুঁক চালায় ওঝা। অভিযোগ, গায়ের নানা অংশ কেটে সেখানে জড়িবুটি বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু কাজ না হওয়ায় শেষে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বছর চল্লিশের মহিলাকে। চিকিৎসকদের তৎপরতায় সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি।
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, সোমবার সকালে গোসাবার মন্মথনগর গ্রামের ঘটনা। সান্ত্বনা নস্কর নামে অসুস্থ মহিলার ‘বিষ ঝাড়ানোর’ চেষ্টা শুরু করে স্থানীয় এক ওঝা। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে তুকতাক। মাথা, থুতনি-সহ শরীরের একাধিক জায়গা কেটে সেখানে গাছগাছড়া বেঁধে দেওয়া হয়। ক্ষতস্থানে তীব্র আলো ফেলে চলে ঝাড়ফুঁক। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত যন্ত্রণা কমেনি সান্ত্বনার। ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। পরিবারের সদস্যেরা তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রাথমিক চিকিৎসার পরে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, মহিলাকে কাঁকড়াবিছে কামড়েছিল। তুকতাকের ফলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন মহিলা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, চিকিৎসার পরে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন সান্ত্বনা। চিকিৎসকেরা জানান, মহিলাকে সত্যিই সাপে কামড়ালে এতক্ষণ ধরে ওঝার কেরামতির ফলে মহিলার প্রাণ সংশয় হতে পারত।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক তথা সাপে কাটা রোগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “এত প্রচারের পরেও মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। সাপে কাটা রোগীকে এত দেরি করে আনা হলে, চিকিৎসার সুযোগই মিলত না। মানুষ সচেতন না হলে, সাপের কামড়ে মৃত্যু বন্ধ করা যাবে না।”