আলমারি ভেঙে জিনিসপত্র লুট হয়েছে। দেখাচ্ছেন তৃণমূল নেতার পুত্রবধূ। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল নেতার বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগ উঠল দলের একাংশের বিরুদ্ধে। নেতার বাড়ির তালা ভেঙে সোনাদানা, নগদ টাকা চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী-সহ মোট পাঁচ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের খেয়াদহ-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দিয়াড়ার ঘটনা।
খেয়াদহ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭ নম্বর বুথের কার্যকরী সভাপতি সঞ্জিৎ বিশ্বাসের অভিযোগ, রবিবার তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বাড়ির মূল দরজা ভেঙে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়ির আলমারি ভেঙে লুট হয়েছে গয়না, নগদ টাকা, টিভি সেট ইত্যাদি। সঞ্জিৎ জানান, তাঁর ছেলে সুমনের বিয়ে হয়েছে জানুয়ারি মাসে। বিয়ের নানা উপহার রাখা ছিল বাড়িতে। সেই সবও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমারই দলের কিছু দুষ্কৃতী এই কাজ করেছে। পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী সুজিত নস্কর এবং তাঁর বাড়ির লোকজন আমার বাড়িতে লুটপাট করেছে। ছেলের বিয়ে হয়েছে ছ’মাস। তার বিয়ের জিনিসপত্র ছিল। তালা ভেঙে সেগুলো নিয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার বাড়িতে আর কিছু নেই। সোনাদানা, টাকা-পয়সা যা ছিল, সব নিয়ে গিয়েছে। চার-পাঁচ ভরি সোনা, ২ লাখ টাকা লুট হয়ে গিয়েছে। থানায় অভিযোগ করেছি।’’
কেন এই হামলা? তৃণমূল নেতার দাবি, তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল আগেই। তাই ভোটের দিন পরিবারের লোকজন নিয়ে তাঁরা অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। তার পরেই বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যা সোনালির স্বামী সুজিত নস্কর-সহ গ্রেফতার মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮, ৪২৭, ৩৮০ এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতদের বারুইপুর আদালতে তোলা হয়।
যদিও ধৃতদের পরিবারের অভিযোগ তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জন্যই মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী সোনালির পরিবারের লোকজন। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রসেনজিৎ নস্কর, অসীম নস্কর, দীপক মণ্ডল এবং রাজু নস্কর। এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পরিবার। সবারই বক্তব্য, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। দলের মধ্যে কোন্দলের জন্যই এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অন্য দিকে, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।