Matirul Biswas

নদিয়ার তৃণমূল নেতা খুনের তদন্তে রাতভর অভিযান, আটক দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী

পুলিশ সূত্রে দাবি, মতিরুল খুনের আটক দুই দুষ্কৃতী আলামিন এবং মিনাজ নিজেদের এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী। বিভিন্ন অভিযোগে কয়েক দফা জেলেও ছিলেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নওদা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪৪
Share:

বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের নওদায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন করিমপুর-২ ব্লকের তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মতিরুল বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।

নদিয়ার তৃণমূল নেতা মতিরুল বিশ্বাসের খুনের তদন্তে নেমে রাতভর তল্লাশি অভিযান চালিয়ে দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে আটক করল পুলিশ।

Advertisement

এই খুনের তদন্তে ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সিটের নির্দেশে অভিযুক্তদের খোঁজে সোমবার রাতে একাধিক জায়গায় অভিযান চালায় নওদা এবং থানারপাড়া থানার যৌথবাহিনী। রাতভর অভিযানে মুর্শিদাবাদ থেকে আলামিন হালসনা এবং মিনাজ শেখ ওরফে দুখু নামে দু’জনকে আটক করে নওদা থানার পুলিশ। আলামিনা নওদা থানা এলাকার বাসিন্দা। অন্য দিকে ডোমকল থানা এলাকার থাকেন মিনাজ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে দাবি, আলামিন এবং মিনাজ নিজেদের এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী। বিভিন্ন অভিযোগে কয়েক দফা জেলেও ছিলেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদ এলাকার একটি খুনের ঘটনার অন্যতম চক্রী ছিলেন আলামিন। মাদক পাচার-সহ একাধিক মামলাও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

Advertisement

মতিরুলের খুনের পর ১০০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এফআইআরে নাম থাকা ‘দোষীদের’ ধরতে পারেনি পুলিশ। এই অভিযোগ তুলেছেন নিহতের স্ত্রী তথা নদিয়ার নারায়ণপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিনা বিশ্বাস খাতুন। সুবিচারের আশায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। সে জন্য বুধবার তিনি কলকাতায় যাচ্ছেন বলে সূত্রের খবর।

নিজের এফআইআরে দশ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন রিনা। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ রিনার। তাঁর দাবি, ‘‘আমার এফআইআরের ভিত্তিতে এখনও মামলাই শুরু করেনি পুলিশ। অবিলম্বে সে মামলা শুরু করে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে।’’ এই খুনের ঘটনায় সিআইডি তদন্তেরও দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। এফআইআরে নাম থাকা ব্যক্তিদের গ্রেফতারির দাবিতে সোমবার মুর্শিদাবাদ এবং কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে যান রিনা। তবে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পরেও কোনও পুলিশ সুপার তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি বলে দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে থানারপাড়া থানায় রিনা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায়। রিনা বলেন, ‘‘অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, তদন্তকারী আধিকারিক উজ্জ্বল বিশ্বাস, এসডিপিও (তেহট্ট), এসডিপিও (বহরমপুর পুর) আজ একসঙ্গে থানারপাড়া থানায় উপস্থিত ছিলেন। তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের জানান। আগামিকাল (বুধবার) কলকাতায় যাচ্ছি কি না, কেন যাচ্ছি, সে তথ্যও জানতে চান।’’ সূত্রের খবর, এফআইআরে রিনা যে দশ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায়।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ মুর্শিদাবাদের নওদার শিবনগর এলাকায় খুন হন মতিরুল (৪৫)। করিমপুর-২ ব্লকের তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ছিলেন তিনি। অভিযোগ, নওদার টিয়াকাটা ফেরিঘাটের আগে শিবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে দেহরক্ষীদের নিয়ে মোটরবাইকে চড়ে যাওয়ার সময় তাঁদের দিকে দুষ্কৃতীরা বোমা ছোড়ে। মোটরবাইক ফেলে শিবনগর গ্রামের দিকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন মতিরুল। কিন্তু, কিছুটা যাওয়ার পর পয়েন্ট ব্ল্যাক রেঞ্জ থেকে তাঁর দিকে একাধিক গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলেও মৃত্যু হয় তাঁর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement