প্রতীকী ছবি।
আমপানের ত্রাণ নিয়ে গোলমাল অব্যাহত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল পরিচালিত ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল পঞ্চায়েতে এ দিনই দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। পঞ্চায়েতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গ্রেফতার হন ১৩ জন।
বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাস (ববি) বলেন, ‘‘তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ লোকজন, যাঁদের ঘরের ক্ষতি হয়নি, তাঁরাই টাকা পেয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে তৃণমূলের প্ররোচনায় লাঠি চালানো হয়েছে।’’ তাঁদের তিন জন জখম হয়েছেন বলেও দাবি বিজেপির। নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মালি মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘সব মানুষই ত্রাণ পেয়েছেন। সকলে পর্যায়ক্রমে ক্ষতিপূরণও পাচ্ছেন। বিজেপির অভিযোগ মিথ্যা।’’
রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের সিপিএম পরিচালিত রাধাকান্তপুর পঞ্চায়েতের সদস্যের বিরুদ্ধেও দুর্নীতি-স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত সদস্য আজমিরা শেখের স্বামী আবদুল্লা শেখ এবং আরও তিন স্থানীয় সিপিএম নেতাকে এ দিন একটি স্কুলঘরে প্রায় আট ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় ঘেরাও-মুক্ত হন সকলে।
সূত্রের খবর, আমপানে ওই পঞ্চায়েতে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬০০ মাটির বাড়ি। ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন মাত্র ৩৬০ জন। লালাপাড়ায় শ’দেড়েক ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন মাত্র ৭-৮ জন। ওই বুথেরই সদস্য আজমিরা। তবে কাজকর্ম মূলত দেখভাল করেন তাঁর স্বামীই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে ৭-৮ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তাঁদের মধ্যে পঞ্চায়েত সদস্যের তিন আত্মীয় আছেন। বাকি যাঁরা টাকা পেয়েছেন, তাঁদের পাকা বাড়ির কোনও ক্ষতিই হয়নি ঝড়ে। স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছেন পঞ্চায়েতের বিরোধী নেতা তৃণমূলের গৌতম সিংহও। পঞ্চায়েতে তাঁর হয়ে কাজকর্ম স্বামীই দেখেন বলে দায় ঝেড়ে ফেলেছেন আজমিরা। প্রধান চম্পা বৈদ্য বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জনের ক্ষতিপূরণের টাকা এসেছে। তৃণমুলের কর্মী-সমর্থকেরাই বেশি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।’’ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে এ দিন বিডিও-কে স্মারকলিপি দেয় এসইউসি। ব্লকের নন্দকুমারপুর পঞ্চায়েতে স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখান। বিজেপি স্মারকলিপি দিয়েছে গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্রকে।
এ দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে টালিখোলা মোড় এলাকায় বনগাঁ-চাকদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে সিপিএম। তৃণমূলের বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘বামেরা আর্থিক সাহায্য পাওয়ার প্রক্রিয়ার বাধা সৃষ্টি করছে। আমরা দুর্নীতিকে প্রশয় দিই না।’’
অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের বুড়াল পঞ্চায়েতেও একই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বিজেপি। তৃণমূলের লোকজন পরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তৃণমূল দাবি করেছে, তাদের কর্মী-সমর্থকদের দেখেই পালিয়ে যায় বিজেপির লোকজন।