ভরতপুরের তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের জন্মদিন পালন করা হচ্ছে কেক কেটে। নিজস্ব চিত্র।
বাজেট ছিল ১৭ লাখ টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০ লাখেই নিজের জন্মদিন উদ্যাপনের খরচখরচা ‘বেঁধে রাখতে’ সক্ষম হলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সোমবারই কলকাতার নজরুল মঞ্চে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যয়সঙ্কোচ, লোভ সংবরণের কথা বলেছেন। তার পরেও কেন এই এলাহি আয়োজন? হুমায়ুন বলেন, “আগে দশ হাজার লোক আসতেন আমার জন্মদিনে নিমন্ত্রণ খেতে। এ বার সেখানে মাত্র চার হাজার জনকে খাওয়ানো হয়েছে।’’
মঙ্গলবার ছিল বিধায়কের জন্মদিন। এ বারে বিধায়কের ষাট হল। শুধু দুপুরের হাজার চারেক লোকের পাত পেড়ে চর্ব্য-চুষ্য খাওয়াই নয়, বিকেলে কাটা হল ৬০ পাউন্ডের কেক। সন্ধ্যায় হল বিচিত্রানুষ্ঠান। খরচ কত হল? হুমায়ুন নিজেই বলেছেন, ‘‘সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে দশ লাখের কাছাকাছি।’’ কিন্তু নেত্রী যে এক দিন আগেই ব্যয়সঙ্কোচের কথা বললেন? প্রসঙ্গ এড়িয়ে দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, “কে কী ভাবে নিজের জন্মদিন পালন করবেন, সেটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।”
দল সূত্রের দাবি, ভরতপুর ১ ও ২ ব্লকের যুব তৃণমূল কর্মীরাও হুমায়ুনের জন্মদিন ‘উদ্যাপনের’ সঙ্গে যুক্ত। ভরতপুর ২ ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি আশরাফ শেখ বলেন, “বিধায়ক সারা বছর অন্যের ভাল-মন্দের কথা চিন্তা করেন। সেখানে তাঁর জন্মদিন পালন করা হবে না! সেটা আবার হয় নাকি!” আশরাফের দাবি, “আমরা, যুব তৃণমূলের সদস্যেরা মিলে নিজেদের মধ্যে তিন লাখ টাকা চাঁদা তুলেছি।’’ তাঁদের আরও দাবি, পাঁচ পাউন্ড করে মোট ১২টি কেক দিয়েছেন বিধায়কের ভাইপো। তিনি শিক্ষকতা করেন। বাকি টাকা বিধায়ক নিজেই দিয়েছেন।
হুমায়ুনের কথায়, ‘‘আমি নিজে প্রোমোটারির সঙ্গে জমি কেনা-বেচার ব্যবসায়ী। সেই টাকা দিয়ে নিজের জন্মদিন পালন করতে অসুবিধা কোথায়!” সালারের ডাকবাংলোর সামনের মাঠে ও বাসস্ট্যান্ড চত্বরে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয়। দুপুরে মেনু ছিল: ভাত, মুসুরির ডাল, ফুলকপি, বেগুন, আলু, সিম দিয়ে তরকারি, মাছের ঝোল ও টোম্যাটোর চাটনি। সন্ধ্যার বিচিত্রানুষ্ঠানে লাখ পাঁচেক টাকা খরচ করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের এক অভিনেত্রীও আমন্ত্রিত ছিলেন। হুমায়ুন অবশ্য বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিনও আমি ৬৮ পাউন্ডের কেক কেটে, শীতবস্ত্র দান করে পালন করতে চাই।’’