বুফে-র আয়োজনে খাবার নষ্ট হয় কম। তা ছাড়াও নিমন্ত্রিতরা নিজেদের ইচ্ছে মতো খেতে পারেন।
বিয়ের মানেই এলাহি আয়োজন। কব্জি ডুবিয়ে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়ার ব্যপার। সেই কারণেই অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি বিয়ের ভোজের দিকে একটু বেশিই নজর দিতে হয়।
বিয়ে হোক বা বৌভাত, প্রত্যেকেই চান খাওয়ার পদের তালিকায় বৈচিত্র রাখতে। কারণ বিয়ের মেনুর প্রধান আকর্ষণই পদের সম্ভার। আর শুধু বৈচিত্র থাকলেই তো হবে না, সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে যেন নিমন্ত্রিতরা খাওয়ার পরে ঢেঁকুর তুলে বলেন ‘আহা! কী খেলাম...’।
সেই কারণেই বিয়ে বা বৌভাতের মেনু ঠিক করার আগে বেশ কয়েকটি বিষয়ের দিকে আলাদা ভাবে মাথায় রাখতে হবে।
১. সব কিছুর আগে খরচের দিকটা ঠিক করে ফেলা প্রয়োজন। অর্থাৎ প্লেট প্রতি মাথা পিছু কত টাকা খরচ হতে পারে। প্রয়োজনে চার-পাঁচটি আলাদা আলাদা কেটারিং সংস্থার সঙ্গে কথা বলে নিন। এর পরেই ঠিক করুন মেনুতে কী কী পদ থাকবে। এতে আপনার মেনুতে যেমন বৈচিত্র থাকবে, তেমন খরচের দিকেও খেয়াল থাকবে আপনার।
২. যত পদই হোক না, আয়োজন এমন ভাবে করতে হবে যাতে খাবার নষ্ট না হয়। সে ক্ষেত্রে বুফে-র আয়োজন করাই শ্রেয়। এতে খাবার নষ্ট কম হয়। তা ছাড়াও নিমন্ত্রিতরা নিজেদের ইচ্ছে মতো খেতে পারেন।
শীতকালে বিয়ের অনুষ্ঠান হলে কবাব, তন্দুরী বা বিরিয়ানির মতো পদ রাখতেই পারেন।
৩. কেটারিং সংস্থা নির্বাচন করার আগে ভাল করে গবেষণা করে নিন। প্রাথমিক ভাবে এই বিষয়টি নিয়ে অন্তত এক বার পরিচতদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়াই শ্রেয়। প্রয়োজনে নেটমাধ্যমেও একটু খোঁজ খবর নিন। মনে রাখবেন এক একটি সংস্থার খাবারের মান এক এক রকম। তাই সে সব বিষয় আগে থেকে দেখে নিয়ে তারপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
৪. কোন সময় বিয়ে করছেন তার ওপর নির্ভর করে খাবারের পদে কী কী রাখবেন? গরমকালে বিয়ে করলে মেনুতে একটু হাল্কা খাবার এবং ঠান্ডা পানীয় রাখেন অনেকেই। কারণ গরমে রেহাই পেতে ঠান্ডা পানীয় তেষ্টা মেটানোর জন্য জুতসই। তা ছাড়াও গরমের মরসুমে যত হাল্কা খাবার খাওয়া যায় ততই শরীর ভাল থাকে। আবার অন্য দিকে শীতকালে বিয়ের অনুষ্ঠান হলে কবাব, তন্দুরী বা বিরিয়ানির মতো পদ রাখতেই পারেন। ঠান্ডা পানীয়র বদলে রাখতে পারেন কফির ব্যবস্থা, সঙ্গে গরম গরম পকোড়া থাকলে তো কথাই নেই।
৫. আমিষ পদের সঙ্গে নিরামিষ পদের আয়োজন করতে ভুলবেন না যেন। কারণ নিমন্ত্রিতদের মধ্যে এমন অনেকেই থাকতে পারেন যাঁরা আমিষ পদ খান না। সে ক্ষেত্রে নিরামিষ পদের ব্যবস্থা না করলে তাঁদের সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাধাবল্লভী, মশলা কুলচা, পনির, কাশ্মীরি আলুরদমের মতো পদ বেশ ভাল বিকল্প হতে পারে।
৬. মেনু ঠিক করার সময় যে কোনও নির্দিষ্ট একটি ধারার পদ রাখার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ, মোগলাই পছন্দ হলে বিয়ের মেনুতে শুধু মোগলাই পদই রাখুন। আবার চাইনিজ পছন্দ হলে শুধু চাইনিজ খাবারই রাখুন। এর সঙ্গে অন্য কোনও পদ যোগ না করাই ভাল। এতে খরচও বাড়ে। সেই সঙ্গে আলাদা পদটি অনেক ক্ষেত্রেই নষ্ট হয়।
তবে খেয়াল রাখবেন, বিয়ে-বউভাতের মেনু পছন্দ করার সময় নিজেদের পছন্দের পাশাপাশি নিমন্ত্রিতদের কথাটাও মাথায় রাখা উচিত। কারণ বিয়েটা আপনাদের হলেও নিমন্ত্রিতদের পছন্দের সঙ্গে যদি আপনার পছন্দ না মেলে তা হলেই কিন্তু বিপদ। তাই এই ক্ষেত্রে সকলের কথা মাথায় রেখে তবেই খাবার পদ ঠিক করাই শ্রেয়।