প্রতীকী ছবি।
বিয়ের জন্য গয়না কেনা কিন্তু বেশ ঝক্কির কাজ। গয়নার নকশা পছন্দ থেকে দোকান বাছাই, বাজেট ঠিক করা, সব মিলিয়ে অবস্থা খারাপ হওয়ার যো! তবে বিয়ের মরসুম হোক বা বছরের অন্য কোনও সময়, সোনা কেনার ক্ষেত্রে সর্বদাই বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতেই হয়। নইলে চোখের নিমেষে ঠকে যেতে পারেন। কারণ সোনা স্রেফ গয়না বা আভিজাত্য প্রতীক নয়, বহুমূল্য এই ধাতু ভবিষ্যতের সম্পদও বটে।
বিয়ের গয়না কেনার সময় প্রথমেই যে বিষয়টি বোঝার প্রয়োজন সেটি হল সোনা কতটা খাঁটি?
সোনার বিশুদ্ধতার পরিমাপ করা হয় ক্যারটের হিসেবে।
যে চার ধরনের সোনা পাওয়া যায়, তার মধ্যে গয়না বানানোর জন্য ২২ ক্যারট, ২১ ক্যারট এবং ১৮ ক্যারট সোনা ব্যবহার করা হয়।
২৪ ক্যারট সোনাই হল খাঁটি সোনা। অর্থাৎ এই সোনার ২৪ ভাগের মধ্যে ৯৯.৯ শতাংশই খাঁটি সোনা।
২২ ক্যারট সোনায় খাঁটি সোনার পরিমাণ ৯১.৬ শতাংশ।
২১ ক্যারট সোনায় বিশুদ্ধতার পরিমাণ থাকে ৮৭ শতাংশ এবং সব শেষে ১৮ ক্যারট সোনায় বিশুদ্ধতার পরিমাণ ৭৫ শতাংশ।
গয়না তৈরির সময়ে সোনার সঙ্গে ক্যাডমিয়াম নামে একটি ধাতু মেশানো হয়। কারিগরি ভাষায় যাকে আমরা খাদ বলে থাকি। সাধারণত ২২ এবং ২১ ক্যারট সোনা দিয়েই সব চেয়ে বেশি গয়না তৈরি করা হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রেই ১৮ ক্যারট সোনা দিয়ে গয়না তৈরি করা হয়। সোনা খাঁটি কি না তা প্রাথমিক ভাবে বোঝা যায় হলমার্ক দেখে। প্রত্যেক গয়নায় সোনার ক্যারট অনুযায়ী একটি নম্বর লেখা থাকে। এ ছাড়াও ‘ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস’ অর্থাৎ বিআই এস কর্তৃক প্রদত্ত ওই নম্বরের পাশাপাশি স্ট্যাম্প, সাল এবং কারিগরের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ থাকে।
বিয়ের জন্য সোনার গয়না কেনার সময়ে অবশ্যই এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
স্পেকট্রোমিটার নামের একটি যন্ত্র রয়েছে যেটি নির্ভুল ভাবে ওই গয়নায় খাদের পরিমাণ বলে দিতে সক্ষম। শুধু হলমার্কই নয়, স্পেকট্রোমিটার মেশিনে মেপে আপনার সোনার খাদ যাচাই করে তবেই কিনুন।
প্রতীকী ছবি
বিয়ের গয়নার মূল্য যেহেতু অনেকটাই বেশি, তাই সময় নিয়ে ধীরে-সুস্থে বিয়ের গয়না কেনা উচিত। সংশ্লিষ্ট দিনে সোনার দাম সমান থাকলেও, একই গয়নার দাম বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন রকম হতে পারে। গয়না কেনার আগে বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে তার পরেই কিনুন।
মনে রাখবেন, ওজন ছাড়াও কোনও গয়নায় যত বেশি নকশা হবে, খরচ তত বাড়বে। যদি সোনার উপরে কোনও পাথর বা রত্ন বসানো থাকে, তবে তার দামও পাল্লা দিয়ে বেড়ে যায়। তাই বিয়ের গয়না কেনার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিতে অবশ্যই নজর দিন। সেই ক্ষেত্রে সোনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট রত্ন বা পাথরের মান নির্ণয় করতে ভুলবেন না যেন।
প্রতীকী ছবি
সব শেষে বিয়ের গয়নার ভবিষ্যৎ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ের গয়না ঠাঁই পায় লকারে। গয়না ভারী হলে, তা হয়তো আর কখনও পরাই হয় না। বাঙালির রীতি অনুযায়ী, প্রজন্মের পর প্রজন্ম উত্তরাধিকার সূত্রে ওই গয়নার দাবিদার হন। তবে সময় বদলেছে। বিয়েতে কেনা বা পাওয়া সোনার গয়না এখন লগ্নিও বটে! এমন গয়নাই কেনা উচিত, যা পরবর্তী সময়ে ব্যবহার করা যাবে। আর একান্তই যদি লগ্নির লক্ষ্য থাকে তবে অবশ্যই বাজার যাচাই করে তবেই গয়নায় বিনিয়োগ করুন।