প্রতীকী ছবি।
বিয়ের সাজে গয়না বেশ অনেকটা জায়গা নিয়ে থাকে। চুড়ি, কানের দুল, হার, আংটি এই সব কিছু নিয়ে অপরূপ সাজে সেজে ওঠেন কনে। কিন্তু এই সব জাঁকজমকের নেপথ্যে আমরা অনেকেই আরও একটি গয়নার কথা প্রায়শই ভুলে যাই— নোয়া বাঁধানো বা লোহা বাঁধানো। বাঙালি বিবাহের রীতি অনুযায়ী শাশুড়ি বউমাকে এই নোয়া বাঁধানো দিয়ে আশীর্বাদ করেন। বিয়ের পরে মেয়েদের বাঁ হাতে এই নোয়া বাঁধানো ঠাঁই পায়। বলা যায় বিয়ের গয়নার মধ্যে নোয়াই একমাত্র গয়না, যেটি মেয়েরা সব সময় পরে থাকেন। এই গুরুত্বপূর্ণ গয়নাটি কেনার সময় বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
প্রথমত, হাতের মাপ। নোয়া বাঁধানো কেনার সময় আগেভাগেই কনের হাতের মাপ নিয়ে রাখা উচিত। যেহেতু এটি কনের হাতের সর্বক্ষণের সঙ্গী হতে চলেছে, সেহেতু এটি যেন কখনই খুব আঁটো বা আলগা না হয়। তা হলে সমস্যা হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, নোয়া বাঁধনো সাধারণত প্রস্তুতই কেনা হয়। অর্থাৎ সোনার দোকানে আগে থেকেই বিভিন্ন নকশার নোয়া উপলদ্ধ থাকে। সেখান থেকে বেছে পছন্দসই নকশাটি কিনে নিলেই হল। যদি নকশা পছন্দ না হয়, তবে স্যাঁকরাকে দিয়ে মেয়ের হাতের মাপ নিয়ে নিজের মতো করে গড়িয়ে নিন।
তৃতীয়ত, লোহার উপরে সোনার পরত বসিয়ে তৈরি করা হয় নোয়া। তাই সোনার দামের উপরে নোয়া বাঁধানোর দাম বাড়ে-কমে। তাই যখন আপনি মেয়ের জন্য বিয়ের গয়না কিনছেন, তখন একসঙ্গেই নোয়া কিনে নেওয়াই শ্রেয়।
চতুর্থত, নোয়ায় ঠিক কত ক্যারাট এবং কত ওজনের সোনা ব্যবহার করা হয়েছে, তা যাচাই করে নিন। অবশ্যই নির্দশক ছাপ দেখে তবেই কিনবেন।
পঞ্চমত, লোহার উপরে সোনার পরত ঠিক মতো বসেছে কি না তা অবশ্যই ভাল করে দেখে নিন। সোনার পরত ঠিক মতো না বসলে ব্যবহারের কিছু দিনের মধ্যেই আলগা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ষষ্ঠত, লোহা এমন একটি ধাতু যা ঋতু বিশেষে প্রসারিত এবং সঙ্কুচিত হয়। আর যেহেতু এটি সর্বক্ষণের সঙ্গী, সেহেতু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সোনার পরতটি আলগা হয়ে যেতে পারে। তাই অবশ্যই নোয়া বাঁধানো কেনার পর থেকেই এটির যত্ন নিন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিষ্কার করুন। প্রয়োজনে দুই বছর অন্তর অন্তত একবার সোনার দোকানে গিয়ে দেখিয়ে নিন। তাতে নোয়া ভাল থাকবে এবং আয়ুও অনেকটা বেড়ে যাবে।
মনে রাখবেন, শাশুড়ির তরফে দেওয়া আশীর্বাদি গয়নাগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। তাই এটির উপরে বিশেষ নজর দিন।