ছবি: সংগৃহীত।
লস অ্যাঞ্জেলেসের অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমশ। এখনও পর্যন্ত অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাজার হাজার বাড়ি আগুনে পুড়ে গিয়েছে। এক লক্ষেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া। আমেরিকার ইতিহাসে এটিই হয়তো সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। তবে লস অ্যাঞ্জেলেস যে এ রকম ভয়ঙ্কর আগুনে পুড়বে সে সম্পর্কে নাকি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। করেছিল আমেরিকার কার্টুন শো ‘দ্য সিম্পসন্স’! কিন্তু কী ভাবে?
‘দ্য সিম্পসন্স’। আমেরিকার এই জনপ্রিয় কার্টুন শুরু হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। বিপুল জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল। এখনও সমান জনপ্রিয়। ‘দ্য সিম্পসন্স’-এর নির্মাতা ম্যাট গ্রোইনিং। আমেরিকার টেলিভিশন সংস্থা ‘ফক্স ব্রডকাস্টিং কোম্পানি’র জন্য তৈরি করা হয়েছিল সেই কার্টুন। তবে শুধু ‘সিম্পসন্স’ পরিবারের হাসির কাণ্ডকারখানা নিয়ে নয়, কয়েক দশকের মধ্যে অন্য এক কারণেও জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করে এই কার্টুন শো। ‘দ্য সিম্পসন্স’ কার্টুনে এমন অনেক ঘটনা দেখানো হয়েছে, যা পরবর্তী কালে সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। কেমন ছিল ‘সিম্পসন’ শোয়ের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’? ২৪ বছর আগে একটি পর্বে দেখানো হয়েছিল যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এক দিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবেন। এর অনেক পরে প্রেসিডেন্ট হন ট্রাম্প। ২০০৬ সালের একটি পর্বে দেখানো হয়েছিল টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়েছে সিম্পসন পরিবার। ২০২৩ সালের জুনে একই রকমের এক ঘটনা ঘটে। ‘সিম্পসন’ শোয়ের অনুরাগীদের দাবি, করোনা অতিমারি যে আসবে, তা-ও নাকি আগেই দেখানো হয়েছিল। আমেরিকার ‘টুইন টাওয়ার’ বিপর্যয়ের ভবিষ্যদ্বাণীও নাকি করেছিল ‘সিম্পসন’ শো। তবে সম্প্রতি একটি ভিডিয়োয় দাবি করা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে যে ভয়াবহ আগুন লাগবে, তা-ও নাকি দেখিয়েছিল ওই কার্টুন শো।
‘ম্যাট১৮৭’ নামের এক্স হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করা ভিডিয়োয় দাবি করা হয়েছে যে, প্রায় ১৮ বছর আগে বিধ্বংসী ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল ‘দ্য সিম্পসন’। ‘দ্য সিম্পসন’-এর ১৮ নম্বর সিজ়নের ১২ নম্বর পর্ব ‘লিটল বিগ গার্ল’-এ ওই অগ্নিকাণ্ডের কথা বলা হয়েছিল বলেও দাবি। ওই পর্বটি সম্প্রচারিত হয়েছিল ২০০৭ সালে। দাবি, ওই পর্বে দেখানো হয়েছিল একটি বড় বনে আগুন লেগেছে, যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যায়। দমকলকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। অনুরাগীদের দাবি, কার্টুনে দেখানো অগ্নিকাণ্ড এবং বাস্তবের অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে নাকি প্রচুর মিল। আর তা নিয়েই হইচই পড়েছে সমাজমাধ্যমে।
উল্লেখ্য, ‘দ্য সিম্পসন’ নিয়ে অনেক ‘কন্সপিরেসি থিয়োরি’ রয়েছে। এগুলির মধ্যে অন্যতম, সিম্পসনের নির্মাতা ম্যাটের কাছে নাকি এমন এক যন্ত্র রয়েছে, যা চড়ে তিনি ভবিষ্যৎ দেখে এসেছেন এবং সেই মতো তৈরি করেছেন ‘দ্য সিম্পসন্স’-এর বিভিন্ন পর্ব। এমন মনে করার আরও এক কারণ হল— ‘ফিউচারামা’ নামে ম্যাটের তৈরি অন্য একটি শো। সেই কার্টুনের চরিত্রগুলিকে ‘টাইম ট্র্যাভেল’ করতে দেখা গিয়েছিল। ম্যাটের সময়যান নিয়ে আগ্রহের কারণেও দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিয়েছেন অনেকে। অনেকের মতে, ম্যাটের কাছেই ছিল বিশেষ সময়যান। অথবা, তিনি ভবিষ্যৎ দেখতে পেতেন। তবে সেই দাবির কোনও সত্যতা কখনও প্রমাণ হয়নি। ম্যাট নিজে সে কথা কখনও স্বীকার করেননি।