ছবি: সংগৃহীত।
কথায় আছে কান্নাকে হাতিয়ার করে নারী অনেক যুদ্ধ জিতে নেয়। সেই কান্নাকেই আক্ষরিক অর্থে মোক্ষম অস্ত্রের রূপ দিলেন তাইওয়ানের এক মহিলা। ই ফেই চেন নামের এক শিল্পী হতাশা ও কান্নাকে প্রতিরোধের হাতিয়ার করে তুলেছেন। চেনের অস্ত্রটি একটি বন্দুকের মতো কাজ করে। সেখানে কান্না জমাট বেঁধে বন্দুকের বুলেটের মতো আকার নেয়। সেই বুলেট ছুড়লে তা মারাত্মক অস্ত্রের মতো আঘাত করবে বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন অস্ত্রটির উদ্ভাবক চেন। তাঁকে কেউ উত্ত্যক্ত করলে নির্দ্বিধায় চোখের জলের বুলেট দিয়ে পাল্টা প্রত্যাঘাত করেন তিনি।
এই অস্ত্রটি তৈরির নেপথ্যের কারণটি সত্যিই অবাক করে দেওয়ার মতো। ২০১৬ সালে চেনের সঙ্গে তাঁর শিক্ষকের মতবিরোধ ঘটে। কিছুতেই শিক্ষকের সঙ্গে সহমত হতে পারছিলেন না চেন। অপমানিত চেনের বুকের ভিতরে কান্না ও হতাশা জমা হতে থাকে। শিক্ষকের অপমানের জবাব সেই মুহূর্তে দিতে পারেননি তিনি। কান্না বুক ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইলেও সেই সময়ে স্থবির হয়ে যান চেন। অতীতের সেই ঘটনা থেকেই এই অভিনব অস্ত্রটির পরিকল্পনা করেন তাইওয়ানের তরুণী। নেদারল্যান্ডসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার সময় এই অস্ত্রটিকে তিনি প্রজেক্ট হিসাবে জমা করেন। প্রথম কার্যকর প্রোটোটাইপ তৈরি করতে তার তিন মাস সময় লেগেছিল।
কী ভাবে কাজ করে এই ‘অস্ত্র’? যন্ত্রটিতে একটি বোতলের ভিতরে কার্বন-ডাই অক্সাইড উচ্চ চাপে সঞ্চিত থাকে। নলের মাধ্যমে চোখের জল সংগ্রহ করে তাকে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে জমাট বাঁধার কাজ করে কার্বন-ডাই অক্সাইড। মিনি আইস বুলেটগুলি একটি স্প্রিং মেকানিজ়মের মাধ্যমে বন্দুকের নল দিয়ে বেরিয়ে আসে। মজার কথা হল, চেন তাঁর চোখের জলকে অস্ত্রে পরিণত করার আগে এর ধারণা নিয়ে হাজির হন তার পূর্বতন শিক্ষকের কাছে। এই শিক্ষকের সঙ্গে মতবিরোধের ফলেই চেন যন্ত্রটি তৈরি করেন। আশ্চর্যজনক ভাবে তিনি এটি পছন্দ করেন এবং এর কাজ দেখে খুশিও হন। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে বন্দুকসমেত নিজের একটি ছবিও পোস্ট করেছেন চেন।