১৬ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনে রংপুর, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মিলিয়ে বাংলাদেশে যে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছিল, আবু সাঈদ তাঁদেরই একজন। ঢাকায় সে দিন যে দু’টি লাশ পড়েছিল, তার একটি ছিল হকার মোহাম্মদ শাহজাহানের এবং অন্যটি ছিল ছাত্রলীগের সবুজ আলীর। আর চট্টগ্রামের মৃতদের মধ্যে ছিলেন মোহম্মদ ফারুক, ওয়াসিম আকরাম এবং ফয়সাল আহমেদ। ওয়াসিম এবং ফয়সাল দু’জনেই ছিলেন শিক্ষার্থী। আর বত্রিশ বছরের ফারুক ছিলেন আসবাবশিল্পী।
একদিকে ছাত্রলীগ এবং সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ। আর অন্যদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলছে পুলিশের গুলি। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে তখন রণক্ষেত্র। পুলিশের রবার বুলেটের সামনে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আবু সাঈদ। বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা হঠাৎ বসে পড়ল। আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা... না, আর পারলেন না। রক্ত বুকে আবু সাঈদ লুটিয়ে পড়লেন রাজপথে। বুলেটের ঠিকানায় লেখা হল আবু সাঈদের নাম।
১৯৮৭ সালে এরশাদের আমলে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল ছাত্র নূর হোসেনের। সেই মৃত্যু কবি শামসুর রহমানকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছিল — ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’। ৩৭ বছর পর সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। আবু সাঈদের মৃত্যু আবারও মনে করিয়ে দিল—
শহরে টহলদার ঝাঁক ঝাঁক বন্দুকের সীসা
‘আবু সাঈদের’ বুক নয়, যেন বাংলাদেশের হৃদয়...