২২ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত মিউজ়িয়ামের আনাচকানাচে ছড়িয়ে রাখা রয়েছে ডুবে যাওয়া জাহাজের অসংখ্য জিনিস। ছবি: সংগৃহীত।
টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পর ১১৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবে এ নিয়ে তৈরি হওয়া হলিউডের ছবি, অসংখ্য গবেষণা জাহাজটির কথা ভুলতে দেয়নি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল এবং বৃহৎ জাহাজ নিয়ে জনমানসে কৌতূহল বেড়েছে বই কমেনি।
১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল ইংল্যান্ডের সাদাম্পটন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল টাইটানিক। গন্তব্য ছিল আমেরিকার নিউ ইয়র্ক। ১৫ এপ্রিল উত্তর অতলান্তিকে নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের কাছে হিমশৈলে ধাক্কা লেগে জাহাজটি ডুবে যায়। সেই ঘটনায় দেড় হাজার যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল।
জানা যায়, হিমশৈলে ধাক্কা খেয়েই এই জাহাজটি ডুবে গিয়েছিল। যে সময় জাহাজটি ডুবে যায়, তখন মহাসাগরের জল ছিল প্রচণ্ড ঠান্ডা। সেখানে সেই সময় তাপমাত্রা ছিল -২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরফশীতল সেই জলে বহু যাত্রী জমে গিয়েছিলেন। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? অমন ঠান্ডা জলে এক বার পড়লে কেমন অনুভূতি হবে, পরখ করে দেখতে চান? দেখতে চান, ছবিতে দেখা সেই বিলাসবহুল জাহাজটি? তবে যেতে হবে আমেরিকার টেনেসিতে। সেখানেই রয়েছে টাইটানিক মিউজ়িয়াম। প্রবেশপথেই চোখে পড়বে জাহাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের আদলে তৈরি মডেল। যেখানে রয়েছে নোঙর থেকে জাহাজের হুইল। প্রবেশপথেই শোভা পাচ্ছে জাহাজের নাবিকের বিশাল একটি টুপির মডেল।
২২ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত মিউজ়িয়ামের আনাচকানাচে ছড়িয়ে রাখা রয়েছে ডুবে যাওয়া জাহাজের অসংখ্য জিনিস। ছবি, ম্যাপ, মডেল। টাইটানিক সম্পর্কে ধারণা দিতে, এখানেই রয়েছে জাহাজের অর্ধাংশের নিখুঁত অনুকরণে তৈরি একটি মডেল। সেখানে গেলে, হলিউড ছবির দৃশ্যাবলির সঙ্গে অনেক সাযুজ্যই চোখে পড়বে। তবে টাইটানিকের ইতিহাস, ভয়াবহ দিনটির অভিজ্ঞতা এখানে ঘুরতে আসা অতিথিদের মনে আরও গভীর ভাবে এঁকে দিতে, এক অভিনব পন্থার ব্যবস্থা করেছেন মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষ।
১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল দুর্ঘটনার দিনে অতলান্তিকে ডুবে যাওয়ার সময় জল ঠিক কতটা ঠান্ডা ছিল, তা বোঝাতে মিউজ়িয়ামের একটি ছোট্ট জায়গায় সেই তাপমাত্রার জল রাখা হয়েছে। ভ্রমণার্থীরা সেই জলে হাত ছুঁইয়ে পরখ করছেন শীতলতার মাত্রা। বেশির ভাগ লোকজনই ২ মিনিটের বেশি সেই জলে হাত ডুবিয়ে রাখতে পারেননি। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে চর্চাও শুরু হয়েছে। ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে।
এই মিউজ়িয়ামে রয়েছে টাইটাইনিকের যাত্রীদের ব্যবহৃত বহু জিনিস। ৪০০-এর বেশি সামগ্রীতে সেজে উঠেছে স্থানটি। এখানে এলে ছবিতে দেখা টাইটানিকের নাবিকের মতোই একই রকম সাজপোশাকের কর্মীদের পাবেন। তাঁরা বিশদে বুঝিয়ে দেবেন সব কিছু। এখানকার কর্মীরাও সাহায্য করবেন প্রমোদতরীর ইতিহাস জানতে।