ওড়িশার বাগদা সৈকতে ঘুরে আসুন এই পুজোয়। ছবি: সংগৃহীত।
সমুদ্র আছে, তবে পুরীর মতো বড় বড় ঢেউ নেই। মাথা গোঁজার ঠাঁই আছে, তবে বিলাসবহুল হোটেল নেই। মুক্তোর মালা নিয়ে বিক্রির জন্য জোরাজুরি নেই। আলো, দোকান, হইচই— কিছুই নেই।
তবে আছে প্রকৃতির সান্নিধ্য। ঢেউয়ের আলতো পরশ। লাল কাঁকড়ার ছুটোছুটি। নিখাদ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের টানেই যদি বেরিয়ে পড়তে চান, তা হলে এই ঠিকানা আপনার জন্য। কলকাতা থেকে ঘণ্টা পাঁচেকের দূরত্বে পৌঁছে যেতে পারেন এক সুন্দর সৈকতে।
অচেনা নয়, এখন তার মোটামুটি নামডাকও হয়েছে। বাগদা বিচ। গত কয়েক বছর ধরে নিরালা সৈকতের খোঁজে বেরিয়ে পড়া পর্যটকদের হাত ধরে একটু একটু করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওড়িশার ডবলাগড়ির বাগদা বিচ।
এখানে যাঁরা যান, দু’টি দিন সমুদ্রের সান্নিধ্যেই কাটিয়ে আসেন। তবে হাতে যদি আর একটা দিন সময় রাখেন, তা হলে ঘুরে নিতে পারেন আশপাশের আরও কয়েকটি স্থান।
নীলগিরি হ্রদ
নীলগিরি পাহাড়ের কোলে রয়েছে নীলগিরি হ্রদ। এখানে অবশ্য সযত্নে সাজানো কোনও কিছুই নেই। পাহাড়ের কোলে রয়েছে ছোট্ট একটি হ্রদ। চড়া রোদের বদলে, সকালে কিংবা পড়ন্ত বিকেলে এমন জায়গায় গেলে ঘুরতে ভাল লাগবে। বাগদা থেকে নীলগিরি হ্রদের দূরত্ব মোটামুটি ৫৪ কিলোমিটার।
জগন্নাথ মন্দির
বালেশ্বরের বালগোপালপুরে রয়েছে একটি জগন্নাথ মন্দির । বাগদা সৈকত থেকে জায়গাটি প্রায় ৪০ কিলোমিটর দূরে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে তৈরি মন্দিরটি ৭৮ ফুট উঁচু। মূল মন্দির ছাড়াও ৩ একর বিস্তৃত জায়গার রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য মন্দির। দেওয়ালের কারুকাজও নিখুঁত। গাছপালা ঘেরা জায়গাটি বেশ মনোরম। ঘণ্টাখানেক সময় থাকলেই এই জায়গাটি ঘুরে নিতে পারবেন।
ক্ষীরচোরা গোপীনাথ
বাগদা সৈকত ৩৬ কিলোমিটার দূরে রেমুনায় রয়েছে ক্ষীরচোরা গোপীনাথ মন্দির। রঙিন কারুকাজ করা মন্দির। গোবিন্দ এবং মদনমোহনের কালো পাথরের মূর্তি রয়েছে এখানে । এখানে পূজিত হন গোপীনাথ। এখানে পাবেন ক্ষীর প্রসাদ। বিভিন্ন দামের তিন রকম ক্ষীর প্রসাদ পাওয়া যায়। শালপাতা দিয়ে মোড়া, দড়ি দিয়ে বাঁধা ছোট হাঁড়িতে দেওয়া হয় ক্ষীর।
যেতে কত ক্ষণ সময় লাগবে?
কলকাতা থেকে বাগদা সমুদ্রসৈকতের দূরত্ব ২৪৬ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগবে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে কোলাঘাট-দাঁতন হয়ে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে হবে। হলদিপদার কাছ থেকে বাঁ দিকে বেঁকে যেতে হবে। জাতীয় সড়ক ছেড়ে গ্রামের পথ ধরে বেশ কিছুটা এগিয়ে পৌঁছনো যাবে বাগদা সৈকতে।
কোথায় থাকবেন?
বাগদা সৈকতের কাছকাছি একাধিক থাকার জায়গা রয়েছে। বেশির ভাগই পরিবেশবান্ধব। ছোট ও বড় তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা।
আর কী দেখবেন?
ডবলাগড়ি থেকে ঘুরে নেওয়া যায় চাঁদিপুর, পঞ্চলিঙ্গেশ্বর, কুলডিহার জঙ্গল।