মুম্বইয়ে সাগর এবং সবুজের শোভা উপভোগে তৈরি হচ্ছে বিশেষ পথ। ছবি: প্রতীকি
আরবসাগরের পারে বাণিজ্যনগরী মুম্বই। চোখ ধাঁধানো বহুতল, প্রাণচঞ্চল এই শহরে প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ মানুষের আনাগোনা। কেউ যান কাজের সূত্রে, কেউ ভাগ্য ফেরাতে, কারও আবার উদ্দেশ্য থাকে ভ্রমণ।
ব্যস্ততম শহর মুম্বই এ বার সেজে উঠতে চলছে অন্য ভাবে। এই শহরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের স্থান বেশ কম। তবে প্রথম বার সেখানে তৈরি হচ্ছে সিঙ্গাপুরের ধাঁচে এমন এক পথ, যা মাটিতে নয়, সেতুর মতোই থাকবে উপরে। এই পথ দিয়ে হাঁটলে একাধারে যেমন সবুজের সমারোহ চোখে পড়বে, তেমনই উপভোগ্য হয়ে উঠবে আরব সাগরের রূপ।
মুম্বইয়ের অন্যতম জনপ্রিয় এলাকা মালাবার হিল। সেখানেই কমলা নেহরু উদ্যানের পাশে তৈরি হচ্ছে এই পথ। কমলা নেহরু উদ্যানে স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, বাইরে থেকেও পর্যটকেরা ঘুরতে আসেন। কাঠের সেতুর কায়দায় তৈরি পথটি জুড়বে এই পার্কে। সমগ্র পরিকল্পনাটি করেছে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।
কেন এমন উদ্যোগ?
সিঙ্গাপুরের একাধিক পার্কে পর্যটক আকর্ষণে এরকম কাঠের রাস্তা করা হয়েছে। সুউচ্চ রাস্তা দিয়ে হাঁটলে চারপাশের সবুজের শোভা যেমন উপভোগ করা যায়, তেমনই দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দৃশ্য চোখে পড়ে। মুম্বইও তেমন অভিজ্ঞতা দিতে চায় পর্যটকদের। কারণ, এই শহরে আকাশছোঁয়া বহুতল, ঝাঁ-চকচকে রাস্তাঘাট থাকলেও সবুজের বড়ই অভাব। শহরবাসী থেকে পর্যটকেরা যাতে শহরে থেকেও একটুকরো প্রকৃতি খুঁজে পান, উপভোগ করতে পারেন সবুজ এবং সমুদ্র— তাই এমন উদ্যোগ।
জানা গিয়েছে, সাগরপারে ৭০৫ মিটার লম্বা কাঠের রাস্তাটি তৈরি করা হবে পরিবেশবান্ধব উপায়ে। সমুদ্রের জল যাতে কাঠের পথের স্তম্ভে না আটকায় বা তাতে জলজ প্রাণীদের কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকে নজর থাকবে। এখানে দাঁড়িয়ে পাখিদের আনাগোনা দেখার জন্য থাকবে বিশেষ জায়গা। পথযাত্রা রোমাঞ্চকর করে তুলতে ব্যবহার করা হবে কাচ। যাতে সেই কাচের ভিতর দিয়েও নীচেও দেখা যায়।
প্রবেশ: কমলা নেহরু পার্ক বা উদ্যানের পার্শ্ববর্তী সিরি রোড দিয়ে এই পথে প্রবেশ এবং বেরোনোর ব্যবস্থা করা হবে।
খরচ: এই পথটি নির্মাণের জন্য ২৫ কোটি টাকা ধার্য হয়েছে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই জঙ্গল তৈরি হয়ে গিয়েছে। সামান্য কিছু পরিকাঠামোগত কাজ বাকি রয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে কাঠের রাস্তার কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে বিএমসি।
এত দিন মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভ, জুহু বিচ, কমলা নেহরু পার্ক, নরিম্যান পয়েন্ট, গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া দেখতেন লোকজন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, পর্যটক টানতে এই স্থানও যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে, তা অনুমেয়।