পর পর দুই ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে লজ্জাজনক বিদায় নিশ্চিত করে ফেলার পর এ বার নতুন ঝামেলা স্পেন শিবিরে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে নামার আগে গত বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের প্র্যাক্টিসে কোচের সঙ্গে লেগে গেল টিমের অন্যতম সিনিয়র, সেস ফাব্রেগাসের। যার জেরে মিডিয়া এবং টেলিভিশন ক্যামেরার সামনেই নাটকীয় ভাবে ফাব্রেগাসের প্র্যাক্টিস বিব কেড়ে নিয়ে তাঁকে দলীয় অনুশীলন থেকে বহিষ্কার করে দিলেন ভিসেন্তে দেল বস্কি। স্পেনের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেল বস্কি অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের প্রথম এগারোয় যাঁদের রাখতে আগ্রহী, তাঁরাই গোলাপি বিব পরে প্র্যাক্টিসে নেমেছিলেন। এই দলে ছিলেন ফাব্রেগাস। চলতি বিশ্বকাপে যাঁকে নেদারল্যান্ডস ম্যাচে বারো মিনিট খেলানোর বাইরে ব্যবহারই করেননি দেল বস্কি। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম এগারোয় রাখার ইঙ্গিত দেন। কিন্তু সদ্য চেলসিতে সই করা সাতাশ বছরের অ্যাটাকিং মিডিওর সঙ্গে প্র্যাক্টিসে নাকি বারবার লাগছিল কোচের। ফাব্রেগাস বাকিদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন না বলে বেশ কয়েকবার তাঁকে ডেকে নাকি সতর্ক করেন দেল বস্কি। যাতে ফুটবলার পাল্টা কিছু জবাব দেন। এর খানিক্ষণ পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে ফাব্রেগাসের মানসিকতা এবং শরীরী ভাষার সমালোচনা করে তাঁকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন কোচ। এবং কড়া নির্দেশে বলেন, “নিজের প্র্যাক্টিস বিব জাভি আলোনসোকে দিয়ে মাঠের বাইরে গিয়ে বসে থাক।” চূড়ান্ত অপমানিত এবং ক্ষুব্ধ ফাব্রেগাস নাকি গোমড়া মুখে প্র্যাক্টিস ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে মাঠের ধারে রাখা একটা সাইকেলে উঠে চলে যান।
শোনা যাচ্ছে, স্পেনের এই দুর্দশায় ক্ষুব্ধ ফাব্রেগাস নাকি সরাসরি কোচের সমালোচনা করে ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, দেল বস্কি তাঁকে সুযোগই দেননি দলের হয়ে কিছু করার। এখনও পর্যন্ত স্পেনের হয়ে নব্বই ম্যাচে ১৩ গোল করা ফাব্রেগাসের নামের পাশে বেশ কিছু গোল অ্যাসিস্টও আছে। কিন্তু ব্রাজিলের যুদ্ধে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে তাঁকে তৃতীয় বদলি হিসাবে নামান দেল বস্কি। এবং চিলি ম্যাচে বেঞ্চেই বসিয়ে রাখেন।
প্র্যাক্টিসে ঝামেলার পর আন্তর্জাতিক মিডিয়ার একাংশের ধারণা, অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে নামার সুযোগ হারিয়ে ফেললেন ফাব্রেগাস। অবশ্য স্প্যানিশ মিডিয়ার অনুমান, এমন নাটকীয় প্র্যাক্টিস-পর্বের পরেও দেল বস্কি দু’টো কারণে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ফাব্রেগাসকে প্রথম এগারোতেই রাখবেন। প্রথমত, হাসিখুশি দেল বস্কি প্রতিহিংসা পরায়ণ নন বলে। দ্বিতীয়ত, বিশ্বকাপের অবিশ্বাস্য ব্যর্থতার পর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের কোচ চূড়ান্ত চাপে আছেন। এই অবস্থায়, শেষ ম্যাচেও ফাব্রেগাসকে না খেলিয়ে আরও সমালোচনার রাস্তা খুলে দেওয়ার ঝুঁকি তিনি নেবেন না।