জোড়া গোলে নায়ক প্লাজা।
চার্চিল ব্রাদার্স ৪ মোহনবাগান ২
নিজেদের গুহায় এখন আর মোটেও সুরক্ষিত নয় ইস্ট-মোহন। কলকাতায় খেলতে এসে ভিন রাজ্যের দল সহজেই তিন পয়েন্ট নিয়ে চলে যাচ্ছে। এই দৃশ্যও দেখতে হচ্ছে কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের।
রবিবার কল্যাণীতে চার্চিল ব্রাদার্সের কাছে ৪-২ গোলে হারতে হল মোহনবাগানকে। খেলা শেষের মিনিট দশেক আগে অনেক দর্শকই প্রিয় দলের খেলায় হতাশ হয়ে মাঠ ছেড়ে চলে গেলেন।
জোড়া গোল করলেন উইলিস প্লাজা। ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে চার্চিলে যাওয়ার পরে পুরোদস্তুর বদলে গিয়েছেন ত্রিনিদাদ-টোব্যাগোর স্ট্রাইকার। এক ডার্বি ম্যাচের পরে লাল-হলুদ বাতিলের তালিকায় ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল প্লাজাকে। বড় ম্যাচে তাঁর কাছ থেকে গোল চাইতেন ইস্টবেঙ্গল ভক্তরা। কিন্তু, প্রত্যাশা পূরণ করতে পারতেন না তিনি। জার্সির রং বদলানোর পর থেকেই প্লাজা ঘুম কেড়ে নিচ্ছেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের। রবিবারও তিনি বাগান লণ্ডভণ্ড করে দিলেন।
খেলা শুরুর মিনিট দুয়েকের মধ্যেই গোল করে গোয়ার দলটিকে এগিয়ে দেন প্লাজা। বাগানের রক্ষণে রয়েছেন তাঁর দেশেরই দীর্ঘাঙ্গ ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল সাইরাস। অথচ প্লাজা হেড করার সময়ে তিনি তাঁর ধারেকাছে ছিলেন না। চার্চিলের দ্বিতীয় গোলটাও প্রায় প্রথম গোলেরই অ্যাকশন রিপ্লে। প্রথম গোলের সময়ে বাঁ দিক থেকে সেন্টার ভাসানো হয়েছিল। দ্বিতীয় গোলের সময়ে ডান দিক থেকে ভেসে এল সেন্টার। তাতে মাথা ছুঁইয়ে গোল করে যান প্রাইমাস।
মোহনবাগান ব্যবধান কমায় ৩৩ মিনিটে। চার্চিলের পেনাল্টি বক্সে নাওরেমকে ফেলে দেওয়া হলে পেনাল্টি পায় সবুজ-মেরুন শিবির। পেনাল্টি থেকে গোল করেন ফ্রান গনজালেজ। ৩৬ মিনিটে ফের গোল প্লাজার। পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন তিনি। দেবজিৎ বলটা ধরতেই পারতেন। তাঁর হাত ফস্কে বল জালে জড়িয়ে যায়। দেবজিত যে কীভাবে বলটা ফস্কালেন, সেটাই রহস্য।
বিরতিতেই চার্চিল ম্যাচ পকেটস্থ করে ফেলেছিল। হাফ টাইমের পরে মোহনবাগান ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করেছিল। একাধিক সুযোগ তৈরি করেও তার সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। উল্টে চার্চিল ৭৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে ফেলে।
চার্চিলের চতুর্থ গোলের মালিক আবু বকর। ভাসানো বল থেকে হেডে গোল করেন তিনি। লম্বা চেহারার ডিফেন্ডার সাইরাস থাকা সত্ত্বেও এরিয়াল বল থেকেই তিন-তিনটি গোল করে গেল চার্চিল। একটি ক্ষেত্রেও গোলদাতাদের মার্কিং করতে দেখা যায়নি সাইরাসকে। চতুর্থ গোলটির সময়ে আবু বকরকে মার্কিং করছিলেন চামোরো। তিনি আক্রমণে দক্ষ হতে পারেন কিন্তু রক্ষণে তো আর দক্ষ নন। সেই সুযোগে আবু বকর হেডে গোল করেন। খেলা শেষের আগে শুভ ঘোষ সবুজ-মেরুনের হয়ে ব্যবধান কমালেও, তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
স্কোর লাইন বলছে চার্চিল ৪ মোহনবাগান ২। তবে তা অন্যরকম কিছু হলেও হতে পারত। চামোরোকে গোলের গন্ধ মাখা বল বাড়ানো হয়েছিল একাধিক বার। কোনওটায় তিনি জায়গায় পৌঁছতে পারেননি আবার কখনও ঠিকঠাক শটটাই মারতে পারেননি। গোলগুলো তিনি পেয়ে গেলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হলেও হতে পারত।
আই লিগের শুরুতেই কিন্তু পিছিয়ে পড়ছে কলকাতার দু’ প্রধান। ইস্ট-মোহন দুটো করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে ইতিমধ্যেই। কোনও দলই জয়ের মুখ এখনও দেখেনি।