দুই প্রজন্ম: শুভ জন্মদিন লিটল মাস্টার। আশা করি, বাড়িতে জন্মদিন পালনের সঙ্গে অগণিত ভক্তদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করছ। যুব সমাজকে স্বপ্ন দেখাও ক্রিকেট খেলার জন্য। নিরাপদে থাকো। এই ছবি দিয়ে লিখলেন ভিভিয়ান রিচার্ডস।
বাইশ বছর আগের কাহিনি। শারজায় ত্রিদেশীয় ওয়ান ডে কাপের ষষ্ঠ ম্যাচ। ফাইনালে ওঠার অঙ্ক বেশ কঠিন ভারতের সামনে। প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রান অস্ট্রেলিয়ার। ড্যামিয়েন ফ্লেমিং, মাইকেল ক্যাসপ্রোউইজ়, শেন ওয়ার্ন সমৃদ্ধ বোলিংয়ের বিরুদ্ধে সেই রান তাড়া করে তোলার আশা অনেকেই করেননি। কিন্তু একজন ছিলেন। যাঁর লড়াই ম্যাচ জেতাতে না পারলেও ফাইনালের পথ নিশ্চিত করে দিয়েছিল ভারতের। তিনি সচিন তেন্ডুলকর।
শারজায় ম্যাচের মাঝে মরুঝড়ও আটকে রাখতে পারেনি তাঁকে। মাঠে তার চেয়েও বড় ঝড় আছড়ে পড়েছিল তাঁর ব্যাটিং আগ্রাসনে। সেই ঐতিহাসিক ইনিংস ভবিষ্যতে পরিচিতি পেয়ে যাবে ‘ডেজ়ার্ট স্টর্ম’ নামে। ১৩১ বলে সচিনের সেই বিধ্বংসী ১৪৩ রানের ইনিংস ক্রিকেটবিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল।
কিন্তু কী ভাবে এমন এক ইনিংস অনায়াসে উপহার দিয়েছিলেন সচিন? বালি-ঝড়ে খেলা বন্ধ হওয়ার পরে ড্রেসিংরুমে গিয়েই বা কী বলেছিলেন? সেই অজানা গল্প আনন্দবাজারকে শোনালেন সেই প্রতিযোগিতায় ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য হৃষীকেশ কানিতকর। ১৯৯৮ সালের ২২ এপ্রিলের সেই ইতিহাসেরও ২২তম বার্ষিকী হল এ বছরে।
ভারতীয় ইনিংসের মাঝেই শুরু হয়েছিল মরুঝড়। ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয় প্রত্যেককে। তখনও ফাইনালের রাস্তা নিশ্চিত হয়নি ভারতের। ড্রেসিংরুমে ফিরে মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে কী বলেছিলেন সচিন? কানিতকর বললেন, ‘‘সচিন দলকে ফাইনালে তোলার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছিল। কোনও ভাবেই হাল ছেড়ে দিতে রাজি ছিল না। মরুঝড় আছড়ে পড়ায় ওর চোখে বালিও ঢুকে গিয়েছিল। ড্রেসিংরুমে ফিরে চোখে বেশ কিছুক্ষণ ঠান্ডা জলের ঝাপটা দেওয়ার পরে স্বাভাবিক হয় ও।’’ কিন্তু সচিন তার পরেও ছিলেন লক্ষ্যে অনমনীয়।’’ ওর চোখ লাল হয়ে গিয়েছিল। আজহার ভাই জিজ্ঞাসা করেছিল ও ঠিক আছে কি না। সচিন বলেছিল, ‘‘পৃথিবী উল্টে যাক। উইকেট কামড়ে পড়ে থাকব। ফাইনালে উঠতেই হবে আমাদের।’’
কানিতকর আরও বললেন, ‘‘সচিনের মধ্যে ঈশ্বর ভর করেছিল হয়তো সে দিন। ফ্লেমিং, ক্যাসপ্রোউইজ়, ওয়ার্নদের লং অন, লং অফের উপর দিয়ে একটার পর একটা ছয় মেরে যাচ্ছিল। কী করে ওকে থামানো যায়, ভেবে পাচ্ছিল না কেউ। স্লেজিং করেও কোনও লাভ হচ্ছিল না। দাদা পর্যন্ত (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) বলছিল, কী হয়েছে রে আজ ওর।’’ ৯টি চার ও ৫টি ছয়ের সৌজন্যে বিধ্বংসী সেই ইনিংস গড়েছিলেন সচিন। কানিতকরের কথায়, ‘‘বিশ্বের এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে এ রকমই ভয়ডরহীন ইনিংসের প্রয়োজন ছিল। একটিও খারাপ শট না খেলে কী করে বিপক্ষকে নাজেহাল করে তোলা যায়, দেখিয়েছিল সচিন। ভারতীয় ক্রিকেটের এক নতুন অধ্যায় হয়তো শুরু হয়ে গিয়েছিল সে দিন।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)