কুম্বলে ও কোহালির ঝামেলা ভারতীয় ক্রিকেটকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। — ফাইল চিত্র।
বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে প্রথম দিন বসেই নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বোর্ডের সাধারণ সভার পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, তাঁর দল কোচ ও ক্রিকেটারদের জীবন কঠিন করতে আসেননি। তাঁদের জীবন সহজ করার জন্যই এসেছেন।
সৌরভের এ হেন বক্তব্য শোনার পরে অনেকেই বলতে শুরু করেন, বছর দুয়েক আগে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক যদি বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে থাকতেন, তা হলে হয়তো কুম্বলে-কোহালি তিক্ত অধ্যায় ঘটতই না ভারতীয় ক্রিকেটে। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের পরের দিনই ভারতের হেড কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেন অনিল কুম্বলে। কুম্বলে-কোহালি সম্পর্কের অবনতি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে করিয়ে দিচ্ছিল গুরু গ্রেগ ও সৌরভ অধ্যায়কে।
সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস-এর প্রধান বিনোদ রাইয়ের ৩৩ মাসের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে বুধবার। নিজের কার্যকাল সময় প্রসঙ্গে রাই বলেছেন, “আমাদের কার্যকালে প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করতে পেরেছি। মহিলাদের আইপিএল চালু করতে পেরেছি। যদিও তা খুবই ছোট আকারে কিন্তু ম্যাচগুলোর মান বেশ ভাল ছিল। আমরা স্বচ্ছভাবে কাজ করতে পেরেছি।’’
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়নরা অত সহজে শেষ হয় না, ধোনি-প্রসঙ্গে নিজের তুলনা টানলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ
প্রশাসনিক দিক দক্ষ হাতে রাই সামলালেও কুম্বলে-কোহালির মধ্যে ঝামেলা কিন্তু মেটাতে পারেননি। অধিনায়কের সঙ্গে ঝামেলার জেরে কোচের চাকরি ছাড়তে হয়েছিল দেশের প্রাক্তন লেগস্পিনারকে। রাই সম্পর্কে ভারতীয় ক্রিকেটে একটা কথা প্রচলিত হয়ে গিয়েছিল, তাঁর জন্যই এখন রবি শাস্ত্রী ও বিরাট কোহালির বাড়বাড়ন্ত। চলে যাওয়ার আগে ভারতীয় ক্রিকেটের বিতর্কিত এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাই জানান, প্রাক্তন কোচ ও অধিনায়কের সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর জন্য ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটির সাহায্য চেয়েছিলেন।
সেই সময়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিন তেন্ডুলকর ও ভিভিএস লক্ষ্মণ ছিলেন ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটিতে। রাই বলেন, ‘‘সেই সময়ে সৌরভ ও সচিনের সঙ্গে আমার দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালীন সচিনের সঙ্গেও আমার দেখা হয়েছিল। সচিনকে সেই সময়ে বলেছিলাম, বিরাটের সঙ্গে আমার দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা হয়েছে। তবে বিরাটের সঙ্গে কথা বলার পরে আমার মনে হয়েছে, বিরাট চায় না কুম্বলে কাজ চালিয়ে যাক। তোমরা যদি বিরাটের সঙ্গে কথা বলে ওকে বোঝাতে পারো।’’ সচিন-সৌরভ-লক্ষ্মণের মতো ক্রিকেটার বিরাটকে বোঝাতে পারবেন বলেই মনে করেছিলেন রাই। কিন্তু, তাতেও লাভ কিছু হয়নি। রাইয়ের দাবি, অধিনায়ক-কোচের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারেননি একসময়ের কিংবদন্তি ক্রিকেটাররাও। কুম্বলে দল নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যেতে রাজি হননি। কোচের পদ থেকে ইস্তফা দেন। রাই বলেন, ‘‘সৌরভ সম্প্রতি আমাকে বলেছিল, ওরা বিরাটের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় বসেছিল। ওরাই যদি বোঝাতে না পারে, তা হলে আমার পক্ষে কি সে দিন সম্ভব ছিল?’’