গ্যারি হল জুনিয়র। ছবি: এক্স (টুইটার)।
দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেসের একাংশ। চার দিকে আগুনের লেলিহান শিখা। আগুনের কবলে পড়েছে অন্তত ১০০০ বাড়ি। উদ্ধার করা হয়েছে ৭০ হাজারের বেশি মানুষকে। দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হলিউডের বহু অভিনেতার বাড়ি। বহু ক্রীড়াবিদও ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁদেরই অন্যতম প্রাক্তন সাঁতারু গ্যারি হল জুনিয়র। হারিয়ে গিয়েছে তাঁর ১০টি অলিম্পিক্স পদকই। দাবানলের ভয়াবহতা ছুঁয়ে গিয়েছে ডেভিড বেকহ্যামের পরিবারকেও।
১৯৯৬, ২০০০ এবং ২০০৪ অলিম্পিক্সে আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন হল। জিতেছিলেন পাঁচটি সোনা, তিনটি রুপো এবং দু’টি ব্রোঞ্জ পদক। এ ছাড়াও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ছ’টি পদক রয়েছে তাঁর। দাবানলের আগুন ছুঁয়েছে হলের বাড়িও। একটিও অলিম্পিক্স পদক বাঁচাতে পারেনি তিনি। রক্ষা করতে পারেননি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পদকগুলিও। হল বলেছেন, ‘‘অনেকেই জানতে চাইছেন, পদকগুলিও পুড়ে গিয়েছে কিনা। হ্যাঁ, সবই পুড়ে গিয়েছে। পদকগুলো ছাড়া থাকতে পারি না। মনে হয় কিছুই আর নেই। আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। তার জন্য কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। এ ছাড়া আর কীই বা করতে পারি।’’ ৫০ বছরের প্রাক্তন সাঁতারু আরও বলেছেন, ‘‘আমার বাড়িটার কাছে আবার যখন যাব, তখন হয়তো আবেগ সংযত করতে পারব না। ছাইয়ের গাদায় পদকগুলো খুঁজবো। গলে যাওয়া অবস্থায় খুঁজে পেলেও পদকগুলো নিজের কাছে রেখে দেব। জানি না আদৌ পাব কিনা। মনে হয় কিছুই পাব না।’’
মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হল বলেছেন, ‘‘এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি কখনও দেখিনি। কোনও সিনেমাতেও এমন দেখিনি। মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা কথা বলতে দেখি বাড়ির পিছন দিক দিয়ে ঘরে ধোঁয়া ঢুকতে শুরু করেছে। কিছু ক্ষণের মধ্যে আমার বাড়িতেও আগুন ধরে গেল। কয়েকটা বিস্ফোরণের শব্দ পেলাম। আর অপেক্ষা করা সম্ভব ছিল না। বাড়ি ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে আসতে হয়েছিল।’’
শুধু হল নন। লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মেক্সিকোর ফুটবলার কার্লোস ভিলাও। তাঁর বাড়িও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। গৃহহীন হতে হয়েছে এনবিএর দল লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সের কোচ জেজে রেডিককেও। ঘটনার ভয়াবহতা ছুঁয়ে গিয়েছে বেকহ্যামের পরিবারকেও। তাঁর স্ত্রী ভিক্টোরিয়া পুত্রবধূ নিকোলা পেল্টজকে। বিয়ের পর বেকহ্যামের বড় ছেলে ব্রুকলিন লস অ্যাঞ্জেলেসে থাকেন। সম্প্রতি নিকোলার জন্মদিন ছিল। পুত্রবধূকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভিক্টোরিয়া। সমাজমাধ্যমে পুত্রবধূর সঙ্গে একটি ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘শুভ জন্মদিন নিকোলা পেল্টজ বেকহ্যাম। তোমাকে খুব ভালবাসি।’’
আর একটি পোস্টে দাবানল নিয়ে নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছেন ভিক্টোরিয়া। তিনি ভগ্ন হৃদয়ের ইমোজি ব্যবহার করে লিখেছেন, ‘‘দাবানলের ধ্বংসলীলা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে মন খুব খারাপ হয়ে রয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস আমাদের পরিবারের সকলের হৃদয়ের বিশেষ অনুভূতি। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকের জন্য আমরা প্রার্থনা করছি। বিশেষ করে যাঁরা নিজেদের বাড়ি বা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের মতো আমরাও বিধ্বস্ত।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘আমরা সাহসী অগ্নিনির্বাপন কর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে সকলকে রক্ষা করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এই বিধ্বংসী সময়ে সকলে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং পরস্পরের যত্ন নিন।’’