সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
ইডেনে এই ছবি শেষ কবে দেখা গিয়েছে তা মনে করতে পারবেন না অনেকে। তৃতীয় দিন দ্রুত খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখেও মাঠ প্রায় ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। টেস্ট ক্রিকেট দেখার জন্যও এ রকম উন্মাদনা ভারতের আর কোনও মাঠে সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি। বলাই যায়, দিনরাতের টেস্ট দেখার আগ্রহই মাঠ ভর্তি হওয়ার অন্যতম কারণ।
বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় চান, ইডেনের মতোই ভারতের অন্য প্রান্তে দিনরাতের টেস্ট ছড়িয়ে দিতে। রবিবার ম্যাচ শেষে সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘২০০১ সালে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট ম্যাচে এক লক্ষেরও বেশি সমর্থক মাঠে এসেছিলেন। সেই পরিবেশে খেলার মজাই আলাদা। আমি চাই না বিরাট, রোহিত, ইশান্তরা ফাঁকা মাঠে খেলুক। আশা করব, ইডেনের মতো দেশের অন্য প্রান্তেও দিনরাতের টেস্ট ছড়িয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা আবার ফিরবে। সময়ের সঙ্গে সব কিছুরই পরিবর্তন হয়। মানুষের চাহিদাও বদলায়। সেই চাহিদার সঙ্গেই মানিয়ে নিতে হবে আমাদের।’’
বিরাটও সৌরভকে এ বিষয়ে সমর্থন করেছেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে দিনরাতের টেস্ট খেলতে তিনিও রাজি। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের এটাই একমাত্র বিকল্প মানছেন না তিনি। সৌরভ যদিও বলছিলেন, ‘‘২০০৭ সালে যখন প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত জিতে ফিরল, অনেকেই ভেবেছিলেন টি-টোয়েন্টি কোনও ফর্ম্যাটই নয়। দশ বছরের মধ্যে দেখা গেল টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্টেডিয়ামে একটি আসনও ফাঁকা পড়ে নেই। এ বার গোলাপি বলের টেস্ট শুরু হয়েছে। বিরাটদের টেস্ট দেখতেও মাঠ ভর্তি হবে।’’
এত কিছু আয়োজন করার পরে কী অনুভূতি সৌরভের? বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলছিলেন, ‘‘অনেকটা হাল্কা লাগছে। বেশ স্বস্তিবোধ করছি। টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফেরাতে এত কিছু আয়োজন করেছিলাম। প্রচারের কোনও অভাব রাখিনি। শুধু দেখতে চেয়েছিলাম ইডেনের ভর্তি দর্শকাসন। খুবই ভাল লাগছে।’’
নৈশালোকে গোলাপি বল দেখা যাবে কি না তা নিয়ে ছিল উদ্বেগ। দ্বিতীয় দিনের শেষে চেতেশ্বর পুজারা বলেও দিয়েছেন, ‘‘নৈশালোকে বল দেখতে না পাওয়ার কারণেই হয়তো চোট পাচ্ছেন একাধিক ক্রিকেটার।’’ সেই উদ্বেগ ছিল সৌরভেরও। তবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিলেন, দিনরাতের টেস্টের কথা মাথায় রেখেই সবকিছু আয়োজন করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ইডেনের পরিবেশ একেবারে দিনরাতের টেস্ট খেলার আদর্শ। উদ্বেগ অবশ্যই ছিল, শিশির ভেজা বল দিয়ে বোলাররা সাফল্য পাবেন কি না। কিন্তু সে রকম অসুবিধা দেখা যায়নি। এই ম্যাচই যদি চতুর্থ ও পঞ্চম দিন পর্যন্ত গড়াত, স্পিনাররাও সাহায্য পেত।’’ যোগ করেন, ‘‘শেষ তিন-চার বছরে পেসাররাই সাহায্য পেয়ে এসেছে ইডেনে। লাল বলই হোক বা গোলাপি। ইডেনের পিচ এখন পেসারদের স্বর্গ।’’