Pink Ball

সুপারহিট ইডেন টেস্ট! পৃথিবীর ব্যস্ততম মানুষ ছিলাম, বলছেন সৌরভ

ইডেন টেস্ট সুপার-ডুপার হিট। এই ইডেনেই ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়াকে মহাকাব্যিক টেস্টে হারায় ভারত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ১৬:৪৯
Share:

মহারাজার শিরস্ত্রাণ। ইডেন টেস্ট সফলভাবে আয়োজন করেছেন সৌরভ। —ফাইল চিত্র।

এতদিনে বোধহয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়!

Advertisement

দিন-রাতের টেস্ট শুরুর আগে থেকেই প্রবল ব্যস্ত ছিলেন ‘দাদা’। ইডেন টেস্ট সফল হতেই প্রশান্তি খেলা করছিল তাঁর চোখ-মুখে। ম্যাচ শেষের পর সম্প্রচার চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি মনে হয় পৃথিবীর ব্যস্ততম মানুষ ছিলাম। এতদিন দম ফেলারও ফুরসত পাইনি। ইডেনে খেলা দেখার জন্য প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। এতেই আমি খুশি। খেলা তৃতীয় দিনে শেষ হয়ে গেল ঠিকই, তবে চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের টিকিটও বিক্রি হয়ে গিয়েছিল আগেই।’’

ইডেন টেস্ট সুপার-ডুপার হিট। এই ইডেনেই ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়াকে মহাকাব্যিক টেস্টে হারায় ভারত। সেই সময়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে সৌরভ বলেন, ‘‘২০০১ সালের ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্টে টানা পাঁচদিন ইডেন ভর্তি ছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শুধু কলকাতা নয়, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু— যেখানেই ভারত খেলবে, সেখানেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলা দেখার জন্য মানুষ আসবেন। আর কেনই বা আসবেন না। এই দলে রয়েছে বিরাট কোহালি, অজিঙ্ক রাহানে, শামি, চেতেশ্বর পূজারার মতো ক্রিকেটাররা। খেলোয়াড়রাই আসল। তাঁরা খেলে বলেই স্পোর্টস জনপ্রিয় হয়। প্রশাসকরা খেলোয়াড়দের কাজটা সহজ করে দিতে পারেন।’’ সৌরভের পাশে দাঁড়ানো ভিভিএস লক্ষ্ণণ ও সঞ্জয় বাঙ্গার তখন সম্মতিসূচক মাথা নাড়ছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: দাদার দল থেকেই সব শুরু, ইডেনে টেস্ট জিতে সৌরভকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন কোহালি

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি কলকাতার দর্শকদের প্রশংসা করে যান। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিনের থেকেও শনিবার বেশি মানুষ খেলা দেখতে এসেছিলেন বলে মনে হয়েছিল আমার। আজ রবিবার ছুটির দিনও অনেক মানুষ খেলা দেখতে এসেছেন। ওঁরা জানতেন আমরা যে কোনও সময়ে ম্যাচ জিততে পারি। তবুও খেলা দেখার জন্য মাঠে এসেছেন ওঁরা।’’

মাঠে দর্শকদের টেনে আনতে পেরেছেন সৌরভ। এখানেই তাঁর সাফল্য। সীমিত ওভারের দাপটে টেস্ট ক্রিকেট জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। দর্শক আসছে না মাঠে। সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচের উপরে জোর দেন। লক্ষ্মণও এ দিন বলেন, ‘‘দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য কোহালিকে সৌরভের জোরও করতে হয়নি।’’ সৌরভ বলেন, ‘‘কোহালিকে বলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দিন-রাতের টেস্ট খেলতে রাজি হয়ে যায়।’’ ইডেন টেস্টের আগে থেকে গোলাপি বল নিয়ে প্রবল চর্চা শুরু হয়েছিল। সৌরভ বলেন, ‘‘প্রথম দিকে গোলাপি বল নিয়ে আমারও একটু চিন্তা হচ্ছিল। কিন্তু, খেলা শুরু হতে দেখলাম, লাল বলের সঙ্গে খুব একটা পার্থক্য কিছু নেই। লাল বলের থেকে গোলাপি বলের দৃশ্যমানতা বেশি। গোলাপি বল রিভার্স সুইং কম করে। এটা সবে শুরু। টেস্ট ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার জন্য একটা পদক্ষেপের দরকার ছিল।’’ সেই উদ্যোগটাই সৌরভ নিয়েছেন ইডেনে। পাশে দাঁড়ানো সঞ্জয় বাঙ্গার, লক্ষ্মণ উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন সৌরভের।

বাঙ্গার পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে, ‘‘দাদা, টেস্টের প্রথম দিনে সমস্ত খেলার ক্রীড়াবিদদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলে কেন?’’ সৌরভ এক মুহূর্ত না ভেবে বলেন, ‘‘অ্যাথলিটদের প্রতি শ্রদ্ধার জন্যই ওদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, খেলোয়াড়রাই খেলাটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। চিরকাল কেউ খেলবে না। একদিন সবাইকে সরে যেতে হয়। কিন্তু, তাঁর যে অবদান, সেটাকে শ্রদ্ধা করা উচিত। মেরি কমকে দেখো। ছ’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। সেই শ্রদ্ধা থেকেই আমি ওদের আসতে বলেছিলাম। লিয়েন্ডারকেও (পেজ) চেয়েছিলাম। এ বার ওকে পাইনি। নিশ্চয় পরের বার লিয়েন্ডারকে পাব।’’

খেলার প্রতি ভালবাসা, হার না মানা মনোভাব ক্রিকেটার-অধিনায়ক হিসেবে সাফল্য এনে দিয়েছিল প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে। সমস্ত খেলার ক্রীড়াবিদদের প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা সৌরভকে নিয়ে যাচ্ছে অন্য এক উচ্চতায়। ‘দাদা’র ডাক এড়াবে কে!

আরও পড়ুন:উমেশের পাঁচ উইকেট, ইডেনে গোলাপি বলের টেস্ট ইনিংস ও ৪৬ রানে জিতল ভারত​

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement