বিরাট কোহলি। ছবি: এক্স (টুইটার)।
বিশ্বজয়ী দলের সংবর্ধনা মঞ্চে ডাক পড়ল বিরাট কোহলির। শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে এসেছেন বার্বাডোজ়ের ২২ গজে। ক্রিকেটজীবনের একটা অধ্যায় শেষ করে ক্রিকেটপ্রেমীদের ধন্যবাদ জানালেন। আর ভুলে গেলেন প্রশ্নটাই। আরও এক বার জিজ্ঞেস করলেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালককে। ক্রিকেটজীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে দাঁড়ানো কোহলি তখন বিহ্বল।
এ বার বিশ্বকাপ জিতে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। কোহলি গত শনিবারের কথা বলতে শুরু করলেন, ‘‘আমি আর রোহিত শর্মা ১৫ বছর ধরে এক সঙ্গে খেলছি। আমরা দু’জনেই এক বার করে বিশ্বকাপ জিতেছি। দেশকে আরও একটা বিশ্বকাপ দেওয়ার জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা করেছি। পারিনি। এ বার জেতার পর দু’জনেই কাঁদছিলাম। কাঁদতে কাঁদতেই আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলাম। সেই মুহূর্তটা আমার ক্রিকেটজীবনের অন্যতম সেরা।’’ একটু থেমে কোহলি আবার শুরু করলেন, ‘‘২০১১ সালে এই মাঠে যখন বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, খুব আনন্দ হয়েছিল। তখন আমার বয়স ২১ কী ২২। তখন দলের সিনিয়রদের চোখে জল দেখেছিলাম। তাঁদের কান্নার গুরুত্ব বুঝতে পারিনি। মনে আছে সচিন তেন্ডুলকরকে কাঁধে নিয়ে ঘুরেছিলাম আমরা। তাও মনে হয়েছিল, আমরা তো সহজেই বিশ্বকাপ জিতলাম। এ বার উপলব্ধি করলাম একটা বিশ্বকাপ জেতা কত কঠিন। নিজে কেঁদে বুঝলাম ২০১১ সালে সিনিয়রেরা কেন কেঁদে ছিল।’’
অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও বললেন কোহলি। তিনি বললেন ‘‘আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম, তখন রোহিত আমার দলের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার ছিল। এখন ও অধিনায়ক। আমি দলের অন্যতম সিনিয়র। ও যেমন আমাকে সাহায্য করত, আমি তেমন চেষ্টা করি। আমরা সব সময় স্বপ্ন দেখেছি দেশকে বিশ্বকাপ দেওয়ার। না পারলেও চেষ্টা থামাইনি। এই যে দলটা দেখছেন, দুর্দান্ত একটা দল। এরা ভারতীয় ক্রিকেটের পতাকা উঁচুতে ধরে রাখতে পারবে। আরও সাফল্য এনে দেবে।’’
কথা বলতে বলতেই কোহলির উল্লেখ করলেন বিশ্বকাপ ফাইনালের শেষ পাঁচ ওভারের কথা। তিনি বললেন, ‘‘শেষ পাঁচ ওভারের দু’টি ওভার ম্যাচটা আমাদের দিকে নিয়ে এসেছিল। এক জন আছে আমাদের, দুর্দান্ত দু’টি ওভার করেছিল। বুঝতেই পারছেন কার কথা বলছি। হ্যাঁ, যশপ্রীত বুমরা। একটা প্রজন্মে এমন বোলার এক জনই আসে। আমরা ওকে পেয়েছি। এই সাফল্যে ওর অবদানের কথা উল্লেখ করতেই হবে।’’
কোহলির কথায় বার বার ধরা পড়ল এত দিন দেশকে বিশ্বকাপ জেতাতে না পারার আক্ষেপ। অধিনায়ক হিসাবে বড় কোনও প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন করতে না পারার কষ্ট। তবু কোহলির মুখে ছিল হাসি। অবসর নেওয়ার আগে দেশকে অন্তত আর একটা বিশ্বকাপ তো দিতে পারলেন। যে সমর্থকেরা সারা বছর পাশে থাকেন, উৎসাব দেন তাঁদের মুখেও তো হাসি ফোটাতে পারলেন।