বিশ্বকাপ জিতে উল্লাস ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার। ছবি: এক্স।
অবশেষে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। ১৩ বছর পরে আবার ভারতের ট্রফি ক্যাবিনেটে ঢুকেছে বিশ্বকাপ। অধিনায়ক হিসাবে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন রোহিত শর্মা। ট্রফি জিতে রোহিত জানিয়ে দিলেন, এই জয় ৩-৪ বছরের পরিশ্রমের ফসল।
বিশ্বকাপ জিতে রোহিত জানান, এক কথায় নিজের অনুভূতি বোঝাতে পারবেন না তিনি। ভারত অধিনায়ক বলেন, “গত ৩-৪ বছর ধরে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, তা এক কথায় বলে বোঝাতে পারব না। সত্যি বলতে, দলের প্রত্যেকে প্রচুর পরিশ্রম করেছে। তাই এই জয় একটা দিনের নয়, গত ৩-৪ বছরের জয়। গত ৩-৪ বছরে যা পরিশ্রম করেছি তারই ফল পেলাম।”
এর আগেও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে ভারতকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হতাশা সঙ্গী হয়েছে। কিন্তু দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে তাঁরা কী করতে পারেন তা এই ম্যাচে দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রোহিত। ভারত অধিনায়ক বলেন, “হারতে হারতে সবাই বুঝেছে, কঠিন পরিস্থিতিতে কেমন খেলতে হয়। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কী ভাবে ফিরতে হয়, সেটা আমরা দেখিয়েছি। যখন খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে ছিল তখনও আমরা একটা দল হিসাবে খেলেছি। আমরা জিততে চেয়েছিলাম। এ রকম একটা প্রতিযোগিতা জিততে চেয়েছিলাম। দলের সবাইকে নিয়ে আমি গর্বিত।”
চলতি প্রতিযোগিতায় ফাইনালের আগে পর্যন্ত চুপ করে ছিল বিরাট কোহলির ব্যাট। কিন্তু ফাইনালে নিজের সেরা খেলা খেলেছেন তিনি। বিরাটের ৭৫ রানের ইনিংসে ভর করে ১৭৬ রান করে ভারত। বিরাটকে নিয়ে দলের কারও মনে কোনও সন্দেহ ছিল না বলে জানিয়েছেন রোহিত। তিনি বলেন, “কেউ বিরাটের ফর্ম নিয়ে সন্দেহ করেনি। আমরা জানতাম ও কী মানের ক্রিকেটার। ১৫ বছর ধরে সেরা ক্রিকেট খেলেছে বিরাট। বড় মঞ্চে তো সেরা ক্রিকেটারেরা নিজেদের ফর্ম দেখায়। বিরাট একটা দিক ধরে রেখেছিল। সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা দল হিসাবে জিতেছি। আমরা চেয়েছিলাম বিরাট এক দিকে থাকুক, বাকিরা ওকে ঘিরে খেলুক। সেটাই হয়েছে। অক্ষরের ইনিংসটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
দলের বোলারদের প্রশংসাও শোনা গিয়েছে রোহিতের মুখে। বিশেষ করে যশপ্রীত বুমরা ও হার্দিক পাণ্ড্যের কথা বলেছেন তিনি। রোহিত বলেন, “বুমরার সঙ্গে আমি অনেক দিন ধরে খেলছি। কিন্তু এখনও জানি না, কী ভাবে ও এগুলো করে। ও নিজের শক্তিতে বিশ্বাস রাখে। নিজের পরিকল্পনা খুব ভাল ভাবে কাজে লাগায়। হার্দিকও খুব ভাল বল করেছে। শেষ ওভারে যত রানই দরকার থাকুক না কেন, বল করা কঠিন। হার্দিক সেটা করে দেখিয়েছে।”
ভারত যে মাঠেই খেলুক না কেন, দর্শকেরা গ্যালারি ভরিয়েছেন। তাই সকলের শেষে দর্শকদের কথা বলেন রোহিত। ভারত অধিনায়কের কথায়, “নিউ ইয়র্ক থেকে বার্বাডোজ়, যেখানে গিয়েছি, সমর্থকদের পেয়েছি। ওঁদের সেলাম। আমি জানি, এই রাতেও লাখ লাখ দর্শক টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখেছেন। ওঁরাও দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করছিলেন। সেই অপেক্ষা এ বার শেষ হল।”
তার পরে আর বেশি ক্ষণ কথা বলতে পারেননি হার্দিক। সতীর্থেরা তখন ট্রফি ছোঁয়ার জন্য দাঁড়িয়ে। হার্দিক তাড়া দিয়ে রোহিতকে ডাকেন। তার পরেই দলের সকলের সঙ্গে ট্রফি নিয়ে উল্লাসে মাতেন রোহিত।