পুলিশের সামনে খুনের ঘটনার নাট্য রূপান্তর করে দেখান সুশীল। ফাইল চিত্র
তরুণ কুস্তিগীর সাগর রানা হত্যাকাণ্ডের আরও তথ্য জোগাড় করতে মঙ্গলবার কাকভোরে কাজে নামল দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা ও দিল্লি মডেল টাউন থানা। এ দিন ভোর ৪টে নাগাদ অভিযুক্ত অলিম্পিয়ান সুশীল কুমারকে ছত্রসাল স্টেডিয়ামে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নিমাণ করেন দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার আধিকারিকরা। খুনের ঘটনার নাট্য রূপান্তর করা ছাড়াও পুলিশের হোমিসাইড দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও ছিলেন। তাঁরা আরও কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন।
ছত্রসাল স্টেডিয়াম ছাড়াও এ দিন পুলিশের বিশাল দল সুশীলের মডেল টাউনের বাড়ি গিয়েও তদন্ত করেছে। কারণ এই ফ্ল্যাটেই একাধিক দুষ্কৃতিকে রাখতেন সুশীল। গত ৪ মে এই স্টেডিয়ামেই ২৩ বছরের সাগর রানা খুন হন। ১৮ দিন লুকিয়ে থাকার পর অবশেষে গ্রেফতার হয়েছিলেন অলিম্পিক্সে জোড়া পদকজয়ী সুশীল ও তাঁর সঙ্গী অজয় কুমার। আপাতত দুজন অভিযুক্তকে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এ দিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৭ বছরের সুশীল নাকি সোমবার রাতে কিছু খেতে চাননি। গোটা রাত কেঁদেছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সুশীল জানিয়েছেন, ছত্রসাল স্টেডিয়ামে ২৩ বছরের কুস্তিগীর সাগরকে তিনি শুধু ভয় দেখাতেই চেয়েছিলেন। মেরে ফেলতে চাননি। যদিও ৪ মে সুশীলের মারের জেরেই মারা যান সাগর। আর তার পর থেকেই আত্মগোপন করেছিলেন এই অলিম্পিয়ান।
পুলিশ তদন্তে আরও জানতে পেরেছে যে সুশীলের নির্দেশেই প্রিন্স নামের এক ব্যক্তি সাগরকে হত্যা করার ঘটনা মোবাইলে রেকর্ড করে রাখেন। সুশীল বলেছিলেন ওই ভিডিয়ো ভাইরাল করে দিতে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ তাঁকে ঘাঁটানোর সাহস না পায়! সেই ভিডিয়োই এখন তাঁকে বিপদে ফেলেছে। এই ঘটনায় খুনের পাশাপাশি সুশীলের সঙ্গে অন্ধকার জগতের যোগাযোগের কথাও উঠে আসছে। সাগর রানার খুনের দিনও নাকি সেই সব কুখ্যাত ব্যক্তিরা ছিল সুশীলের সঙ্গে। তদন্তকারীরা এই মামলার সঙ্গে জড়িত দুটি ডাবল-ব্যারেল বন্দুক, সাতটি টাটকা কার্তুজ, দুটি কাঠের মোটা লাঠি এবং পাঁচটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে।
শোনা গিয়েছে, পুলিশ হেফাজতে থাকার সময় সুশীল অনুরোধ করেছেন উত্তর ভারতের কুখ্যাত অপরাধী সন্দীপ কালা ওরফে কালা জাঠেড়ির লোকেরা তাঁর কাছে যেন ঘেঁষতে না পারে। কারণ, সাগর রানা খুনের দিন সুশীলের দলবল সোনু মাহাল নামক একটি ছেলেকে ব্যাপক মারধোর করে। এই সোনু আবার কালা জাঠেড়ির ভাইপো। সেই ঘটনার পর থেকে এই কুখ্যাত অপরাধীর লোকজনও সুশীলকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছিল।