ক্ষতিগ্রস্ত ইস্টবেঙ্গলের মূল প্রবেশদ্বার। ছবি: নিজস্ব চিত্র।
লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর উপরে এত দিন অক্ষত অবস্থাতেই দাঁড়িয়েছিল ইস্টবেঙ্গল শতবর্ষের জন্য তৈরি মূল ফটকটি। বৃহস্পতিবার লাল-হলুদের সেই মূল ফটকটাই ছিন্ন ভিন্ন করে দিল সবুজ-মেরুন জার্সি পরিহিত এক দল যুবক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, মোহনবাগানের জার্সি পরা একাধিক যুবক ক্ষতবিক্ষত করছে লাল-হলুদের মূল ফটকটি। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিয়ো। গোটা ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।
কারা ঘটালো এই ঘটনা? ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের অভিযোগের আঙুল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের সমর্থকদের দিকেই। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, শতবর্ষের জন্য তৈরি করা মূল প্রবেশদ্বার ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন মোহনবাগান সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার ডুরান্ড কাপে মোহনবাগান-এটিকে ম্যাচ দেখে ফেরার সময়ে বাগান সমর্থকরা তাণ্ডবলীলা চালান বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে গেটের ভগ্নাবশেষ।
ময়দানের বটতলার সামনে দাঁড়ানো এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, বিকেল পাঁচটা নাগাদ বেশ কিছু যুবক মূল ফটকের সামনে উপস্থিত হয়ে গেট ক্ষতিগ্রস্ত করে। ইস্টবেঙ্গলের সহ সচিব শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। উন্মত্ত জনতাকে ‘ময়দানের সন্ত্রাসবাদী’ বলে উল্লেখ করেন লাল-হলুদ কর্তা। ক্ষুব্ধ শান্তিবাবু আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘এই সব সমর্থককে কোনও দলেই ফেলা উচিত নয়। এরা উগ্র সমর্থক। এদের মধ্যে ক্লাবের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ নেই। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সম্পর্কে এদের কোনও জ্ঞানই নেই। এরা শুধু ভাঙচুর করতেই জানে।’’
মিলছে না পারিশ্রমিক, কানাডায় যুবরাজদের গ্লোবাল টি টোয়েন্টি ঘিরে তুমুল অশান্তি
আরও পড়ুন: মোরান্তে-বেইতিয়ার জাদুতে ডুরান্ডের শেষ চারে মোহনবাগান
ফুটবল সমর্থকদের এ হেন অসহিষ্ণুতা মেনে নিতে পারেননি মোহনবাগানের প্রাক্তন অধিনায়ক কম্পটন দত্ত। তিনি বলেন, “আমার একটাই কথা, যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা অত্যন্ত অন্যায় কাজ করেছে।’’ ১ অগস্ট নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শতবর্ষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মোহনবাগান কর্তা দেবাশিস দত্ত বলেছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান হাত ধরাধরি করে হাঁটবে।’’
ক্ষতিগ্রস্ত ইস্টবেঙ্গলের মূল প্রবেশদ্বার।
ভিডিয়োটি ইস্টবেঙ্গল ফ্যানক্লাবের পেজ থেকে নেওয়া।
সেই সুরে শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খেলার মাঠে নব্বই মিনিট ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান একে অপরের প্রতিপক্ষ। এর বাইরে কিছু নয়। এই ধরনের কাজ যারা করেছে, তারা মোহনবাগানের সমর্থক হতে পারে না।’’ময়দান পুলিশ থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন দেবাশিস দত্ত। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন মোহনবাগানের সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু। তিনি মেল বার্তায় লেখেন, ‘‘এই ধরনের নোংরা এবং অনৈতিক কাজের তীব্র নিন্দা করছি। ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে আমরা গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছি। নতুন করে প্রবেশদ্বার তৈরি করার অনুরোধ জানিয়েছি কল্যাণবাবুকে। ক্ষতিপূরণের খরচ আমরা বহন করব।’’
শতবর্ষের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা ইস্টবেঙ্গলের প্রবেশদ্বার তছনছ করে দেওয়ায় কলকাতা ময়দানে নিন্দার ঝড় উঠেছে।