ফাইল চিত্র।
অলি রবিনসনের ইনসুইংয়ে চেতেশ্বর পুজারা এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার পরেই সুনীল গাওস্কর আন্দাজ করেছিলেন, ম্যাচ শেষ হয়ে যাবে চতুর্থ দিনেই। ভারত পরের সাত উইকেট হারায় মাত্র ১৬ ওভারে। সময় লেগেছে ৫৪ মিনিট। হেডিংলের মতো ব্যাটিং পিচে এ ভাবে ভারতীয় দলকে আত্মসমর্পণ করতে দেখে হতাশ কিংবদন্তি ওপেনার। এই হার মানতে পারছেন না।
গাওস্কর মনে করেন, লর্ডসে ভারতের নীচের সারির ব্যাটসম্যানদের দুঃসাহসিক লড়াই সম্ভব হয়েছিল বিপক্ষের ভুল পরিকল্পনার ফলে। তা না করলে কোনও ভাবে দ্বিতীয় টেস্টও জিততে পারত না ভারত। ম্যাচ শেষে সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে গাওস্কর বলেছেন, ‘‘লর্ডসে বিপক্ষের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আমরা ম্যাচে ফিরে এসেছিলাম। প্রথম তিন উইকেট পড়ার পরে কখনও মনে হয়নি ম্যাচে আমরা ফিরতে পারি। কিন্তু হেডিংলেতে মাত্র ৫৪ মিনিটে সাত উইকেট হারানোর ঘটনা মানা যাচ্ছে না। সত্যিই এই বিপর্যয় ভাবতে পারছি না।’’
ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালিও দলের আত্মসমর্পণে হতাশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৫ রান করলেও তিনি আউট হয়েছেন স্লিপে ক্যাচ দিয়েই। ৬৩ রানে শেষ আট উইকেটের পতন হয়েছে। বিরাট মনে করেন, স্কোরবোর্ড দেখেই চাপে পড়ে গিয়েছিল তাঁর দল। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে ভারতীয় অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘স্কোরবোর্ড দেখে চাপে পড়ে গিয়েছিল দল। আমরা জানতাম ৮০ রানের বেশি করতে পারিনি। সেই পরিস্থিতি থেকে ম্যাচে ফিরে আসতেই হবে। কিন্তু সেটাই সম্ভব হয়নি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘তৃতীয় দিন দু’টো বড় জুটি আমাদের ম্যাচের মধ্যে রেখেছিল। কিন্তু চতুর্থ দিন সকাল থেকে বিপক্ষ বোলারেরা চাপ বাড়াতে থাকে। আমরাও সেই চাপ সামলাতে ব্যর্থ হই।’’
আরও এক বার ব্যাটিং বিপর্যয়। প্রথম ইনিংসের পরে দ্বিতীয় ইনিংসেও একই ছবি। যে পিচে রান উঠছে, সেখানে এ ভাবে কেন উইকেট হারাচ্ছে দল? বিরাটের ব্যাখ্যা, ‘‘এই দেশে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মতো ঘটনা ঘটতেই পারে। পিচ রান করার জন্য উপযুক্ত হলেও বিপক্ষের শৃঙ্খলাপরায়ণ বোলিং আমাদের ভুল করতে বাধ্য করেছে। কয়েক জনের বিরুদ্ধে আমরা রানই করতে পারছিলাম না। বেশ কিছু ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হল।’’
বিরাট যদিও সাত ব্যাটসম্যানে খেলার পক্ষে নন। তাঁর কথায়, ‘‘এই পন্থায় আমি বিশ্বাস করি না। যদি প্রথম ছ’জন রান করতে না পারে, অতিরিক্ত এক জনও পারবে না। আমরা ড্র করার লক্ষ্যে খেলি না। আগে সাত ব্যাটসম্যান নিয়ে বহু ম্যাচ ড্র করেছি।’’
প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকর মনে করেন, ওভালে অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলা উচিত ভারতের। দলে নেওয়া হোক সূর্যকুমার যাদবকে। বিরাট সেই পথে হাঁটেন কি না, সেটাই দেখার।
ওভালে কি দুই স্পিনার নিয়ে দল সাজানো হতে পারে? কোহালির উত্তর, ‘‘পিচে কতটা আর্দ্রতা থাকবে, তার উপরে নির্ভর করছে স্পিনারের সংখ্যা বাড়ানোর সম্ভাবনা।’’
ঋষভ পন্থের ব্যর্থতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পাঁচ ইনিংসে এখনও পর্যন্ত ৮৭ রান করেছেন তিনি। তাঁকে বাদ দিয়ে ঋদ্ধিমান সাহাকে খেলানোর যদিও সম্ভাবনা নেই। অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘পুজারাকে নিয়েও এত দিন কথা হচ্ছিল। আজ তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পন্থকেও যতটা সম্ভব সুযোগ দেওয়া হবে। একটি ম্যাচের ফল দেখে আমি বড় কোনও পরিবর্তন করি না।’’