ফুরফুরে: স্ত্রীর সঙ্গেই জন্মদিন পালন করলেন সুনীল ছেত্রী। টুইটার
সুনীল ছেত্রীর ৩৬তম জন্মদিনেই ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির লক্ষ্যে নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু। সোমবার ফুটবল দিল্লির ভার্চুয়াল ই-সামিট অনুষ্ঠানে জানিয়ে দিলেন, পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ ও উত্তরপূর্ব এই পাঁচটি অঞ্চল থেকে প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার নির্বাচনের জন্য বিশেষ কমিটি গড়া হচ্ছে। এই পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে এ বার থেকে একসঙ্গে কাজ করবে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (সাই), খেলো ইন্ডিয়া ও সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন।
ক্রীড়ামন্ত্রীর আশা, আগামী দশ থেকে পনেরো বছরের মধ্যেই বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক্সের মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন করবে ভারতীয় ফুটবল দল। তিনি বলেছেন, ‘‘কয়েক মাসের মধ্যেই প্রতিভা অন্বেষণের জন্য দেশের পাঁচটি অঞ্চলে কমিটি গড়ে তোলা হবে।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য পেশাদারি মানসিকতা নিয়ে আরও গভীরে গিয়ে কাজ করা। আমাদের লক্ষ্য দেশের সব প্রান্ত থেকে ১২ বছরের কম বয়সি প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার খুঁজে আনা। আমরা যদি এখন থেকেই এই কাজটা শুরু করি, তা হলে ১০-১৫ বছরের মধ্যে বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।’’
জন্মদিনের ব্যস্ততার মধ্যেও সোমবারের এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সুনীল। ভারতীয় দলের অধিনায়ক বলেন, ‘‘জন্মদিনে এর চেয়ে সেরা উপহার আর কিছু হতে পারে না। প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি স্বচ্ছতা থাকে, তা হলে ভারতীয় ফুটবলের অর্ধেক সমস্যাই দূর হয়ে যাবে।’’
কী ভাবে কাজ করবে পাঁচ কমিটি? কারা থাকবেন প্রতিভা অন্বেষণের দায়িত্বে? কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী জানিয়েছেন, এআইএফএফ-এর সাহায্যে প্রাক্তন ফুটবলারদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রাক্তন তারকা সুব্রত ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত। তবে দেখতে হবে, ফুটবলার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেন স্বজনপোষন না করা হয়। প্রকৃত প্রতিশ্রুতিমানদেরই যেন নেওয়া হয়। তা না হলে ফুটবলের উন্নতি সম্ভব নয়।’’ সুব্রত যোগ করেছেন, ‘‘ফুটবলার বাছাইয়ের দায়িত্বও যেন যোগ্য ব্যক্তিকেই দেওয়া হয়। তবে শুধু প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার বাছাই করলেই হবে না, তাদের ঠিক মতো গড়ে তুলতেও হবে। স্কুলগুলিকে নিয়ে প্রতিযোগিতার সংখ্যাও বাড়াতে হবে।’’ শ্যাম থাপা, আইএম বিজয়নের মতো প্রাক্তন তারকারাও সুব্রতর সঙ্গে একমত। ত্রিশূর থেকে ফোনে বিজয়ন বললেন, ‘‘দারুণ পরিকল্পনা। আমি দীর্ঘ দিন ধরেই বলছি, আমাদের দেশে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু তাদের ঠিক মতো তুলে আনা হয় না। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে হবে প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারের খোঁজে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘প্রতিভা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনও রকম পক্ষপাতিত্ব থাকা চলবে না। নির্বাচকদের স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিতে হবে।’’ ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান শ্যাম থাপার কথায়, ‘‘এই পাঁচটি অঞ্চলে আবাসিক অ্যাকাডেমি গড়ে তোলার পরামর্শ এর আগে অনেক বারই ফেডারেশনকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীকে অভিনন্দন এগিয়ে আসার জন্য।’’
প্রতিভা অন্বেষণের জন্য একাধিক প্রাক্তন ফুটবলারকে নিয়োগ করেছে ফেডারেশন। তাঁরা এখন কী করবেন? দিল্লি থেকে ফোনে ফেডারেশন সচিব কুশল দাস বললেন, ‘‘দেশের সব প্রান্ত থেকে প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার অন্বেষণ করার মতো আর্থিক ক্ষমতা ফেডারেশনের নেই। একসঙ্গে কাজ করলে সেই সমস্যা হবে না। আমাদের স্কাউটিং দলের সদস্যরাই কাজ করবেন।’’
ফুটবল দিল্লির ই-সামিট অনুষ্ঠানে ছিলেন এএফসির সচিব দাতো উইন্ডসর। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিভা বাছায়ের জন্য যেন যোগ্য ব্যক্তিকেই নিয়োগ করা হয়।’’ এআইএফএফ সভাপতি প্রফুল্ল পটেল বলেছেন, ‘‘প্রত্যেকটা অঞ্চলের অন্তত একটি সাই কমপ্লেক্সে যেন ফুটবলের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো থাকে। মুম্বইয়েও ফেডারেশনের সেন্টার অব এক্সিলেন্স গড়ে তোলা হবে।’’