মরিয়া: মরণ-বাঁচন ম্যাচের আগে অনুশীলনে সুনীলেরা। এআইএফএফ
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে ভারতীয় দলের অন্দরমহলে অশান্তির আবহ! শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কোচ ইগর স্তিমাচ বলে দিলেন, ‘‘মাঝমাঠ ও রক্ষণের ফুটবলারেরা খুব বেশি বল ধরতেই পারছে না। ওদের আরও দায়বদ্ধতা দেখাতে হবে। সুনীল ছেত্রীকে গোল করার জন্য পাস দিতে হবে।’’
সাত বারের সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত এ বার প্রথম ম্যাচে দশ জনে খেলা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ফল ছিল গোলশূন্য। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, শেষ দু’টি ম্যাচে জিততেই হবে সুনীলদের। আজ, রবিবার মলদ্বীপে ভারতের সামনে দু’ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবলের শীর্ষ স্থানে থাকা নেপাল। যাদের বিরুদ্ধে এক মাস আগেই দু’টি ম্যাচ খেলেছিলেন সুনীলরা। কাঠমান্ডুতে প্রথম ম্যাচে কোনও মতে হার বাঁচিয়েছিল ভারত। শেষ ম্যাচে ২-১ জিতেছিল। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্রয়ের পরে এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। ফিফা ক্রমতালিকায় ১৬৮ নম্বরের নেপালকে নিয়েও আতঙ্কিত ৬১ ধাপ উপরে থাকা ভারতীয় দল।
ইগর সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার রাস্তা এখনও বন্ধ হয়ে যায়নি আমাদের সামনে। তাই যে কোনও মূল্যে শুরু থেকেই জয়ের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘ছয় পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা নেপাল এই ম্যাচে নানা রকম অঙ্ক করে খেলতে পারে। আমাদের পক্ষে সেই বিলাসিতা দেখানোর সুযোগ বা পরিস্থিতি কোনওটাই নেই।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সেপ্টেম্বরে নেপালের বিরুদ্ধে আমরা দু’টি ফ্রেন্ডলি খেলতে গিয়েছিলাম খুব কম প্রস্তুতি নিয়ে। শক্তিশালী দল ওদের। এখন পরিস্থিতি আলাদা। তবুও জিততে না পারার কোনও কারণ রয়েছে বলে মনে করি না। আমরা যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারি, শেষ দু’টি ম্যাচ থেকে ছয় পয়েন্ট অর্জন করা অসম্ভব নয়।’’
ফিফা ক্রমতালিকায় বাংলাদেশ ১৮৯ নম্বরে। শ্রীলঙ্কা ২০৫ নম্বরে। অথচ এই দুই দেশকেও হারাতে পারেনি ভারত। কোথায় সমস্যা? ফের ফুটবলারদের উদ্দেশে তোপ দেগে ইগরের ব্যাখ্যা, ‘‘মাঝমাঠের ফুটবলাররা সুনীলকে ভাল পাস দিতেই পারছে না। তা সত্ত্বেও হেডে দু’বার গোল করার সুযোগ ও পেয়েছিল। যদিও সফল হয়নি। সাধারণত সুনীল এ রকম ভাবে গোল নষ্ট করে না। আমার মনে হয়, ম্যাচ জিততে না পারার হতাশা থেকেই এটা হয়েছে।’’ পাশাপাশি, রেফারির সমালোচনাও করেছেন ভারতীয় দলের কোচ। বলেছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২৭ মিনিট নষ্ট হয়েছিল। এর চেয়ে হতাশাজনক কিছু হতে পারে না। এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য ফুটবলের প্রসার ঘটানো। তাই রেফারিংয়ের মান ভাল হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখা ইগর যোগ করেছেন, ‘‘কোনও অজুহাত দিতে চাই না। ৩০ মিনিটের ম্যাচ হলেও জিততে হবে।’’
নেপালকে হারাতে না পারলে খেতাবি দৌড় থেকে ভারতের ছিটকে যাওয়া যেমন নিশ্চিত, তেমনই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে ইগরের ভবিষ্যৎ!
রবিবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে: ভারত বনাম নেপাল (রাত ৯.৩০, ইউরোস্পোর্ট চ্যানেলে)।