সচিন তেন্ডুলকর
করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইকে পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করলেন ইয়ান চ্যাপেল। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মনে করেন, এই লড়াইয়ে জিততে গেলে তিনটে গুণ অবশ্যই থাকা দরকার— ধৈর্য, মানসিক দৃঢ়তা এবং উদ্যম। যে তিনটে গুণই এক জন ভাল টেস্ট ক্রিকেটারের মধ্যে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন ইয়ান। পাশাপাশি উদাহরণ হিসেবে সচিন তেন্ডুলকর এবং ইয়ান রেডপাথের খেলা দুটো ইনিংসের কথাও বলেছেন তিনি।
একটি জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইটে নিজের কলামে ইয়ান লিখেছেন, ‘‘করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে লড়তে বিশ্বের সব মানুষের মধ্যে চাই ধৈর্য, মানসিক দৃঢ়তা ও উদ্যম। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায় টেস্ট ম্যাচে খেলতে গেলে ঠিক এই তিনটে গুণই দরকার হয় একজন ক্রিকেটারের।’’ এই প্রসঙ্গেই সচিন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার রেডপাথের ইনিংসের কথা বলেন ইয়ান। ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের চেন্নাই টেস্টের কথা বলেছেন তিনি। যে ম্যাচে সচিন তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্নকে।
প্রাক্তন এই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার যোগ করেন, ‘‘সচিন সে বার সিরিজের আগে রবি শাস্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিল, রাউন্ড দ্য উইকেটে এসে ওয়ার্ন পিচের ক্ষত ব্যবহার করে যে ভয়ঙ্কর বলগুলো করে, সেগুলো কী ভাবে খেলা উচিত। শাস্ত্রী বলেছিল, ‘আমার পা লম্বা থাকায় ওয়ার্নের বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক প্রতিষেধক ব্যবহার করতে পেরেছিলাম। কিন্তু তোমার সেটা নেই। তুমি বরং আক্রমণাত্মক ব্যাটিংকে অস্ত্র বানাও।’ সচিন সেই পরামর্শ মেনে সফল হয়।’’ চ্যাপেল এও লিখেছেন, ‘‘শাস্ত্রীর পরামর্শ মেনে সচিন চলে গিয়েছিল এমআরএফ ফাউন্ডেশনের নেটে। পিচে ক্ষত বানিয়ে রিস্টস্পিনার লক্ষ্মণ শিবরামকৃষ্ণনের সঙ্গে অনুশীলন করে প্রস্তুতি নিয়েছিল।’’
চেন্নাইয়ের সেই ইনিংস সচিনের ক্রিকেট জীবনের সেরা আখ্যা দিয়ে ইয়ান আরও বলেন, ‘‘প্রথম ইনিংসে ওয়ার্নের বলে আউট হয়েছিল সচিন। বেশি রান করতে পারেনি। চতুর্থ দিনে আত্মবিশ্বাসী ওয়ার্নের বিরুদ্ধে সেই আক্রমণের রাস্তা নেয় সচিন। ওয়ার্নও বল করতে আসে রাউন্ড দ্য উইকেটে। যার প্রস্তুতি সচিন আগেই নিয়ে ফেলেছিল। ধৈর্য ও একাগ্রতাকে কাজে লাগিয়ে ওই অনবদ্য প্রয়াসে এ ভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারায় সচিন। সঙ্গে টেস্ট ম্যাচে জয় এনে দেয় ভারতকেও।’’
১৯৭৬ সালে মেলবোর্নে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে রেডপাথের ইনিংসের কথাও উল্লেখ করেছেন ইয়ান। তাঁর মতে, ‘‘সচিনের মানসিক দৃঢ়তা ও উদ্যমের সঙ্গে রেডপাথের ধৈর্যকে মিলিয়ে দিন। তা হলেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মন্ত্র পেয়ে যাবেন।’’