‘প্যাড পরে বসে থাকতে হয় না, এটাই তো ভাল’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন রোহিত। যার পরে লাল বলের ক্রিকেটে তাঁর ওপেনিং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১৭
Share:

তৃপ্ত: রোহিতের মুখে সেঞ্চুরির হাসি। স্বস্তি শিবিরেও। পিটিআই

ভারতীয় টেস্ট দলের ওপেনার হিসেবে প্রথম পরীক্ষায় বাজিমাত রোহিত শর্মার। বুধবার বিশাখাপত্তনমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৭৪ বলে তিনি অপরাজিত ১১৫ রানে। ১২টি চার ও পাঁচটি ছয়ের সৌজন্যে বিপক্ষের বোলিং বিভাগকে নির্বিষ করেছেন ‘হিটম্যান’। মায়াঙ্ক আগরওয়ালের (অপরাজিত ৮৪) সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটিও ২০২ রানে অক্ষত।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন রোহিত। যার পরে লাল বলের ক্রিকেটে তাঁর ওপেনিং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু আসল পরীক্ষার দিন রোহিতকে আটকাতে পারলেন না ভার্নন ফিল্যান্ডার, কাগিসো রাবাডারা। নতুন দায়িত্ব পেয়ে কী মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন রোহিত? প্রথম দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে ‘হিটম্যান’ বলেন, ‘‘আমি যে ধরনের ব্যাটিং করি, তাতে ওপেনারের জায়গাতেই বেশি মানানসই। শুরুতেই প্যাড পরে মাঠে নেমে যেতে পছন্দ করি। পাঁচ অথবা ছয় নম্বরে নামতে হলে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। তবে এটা বলতে চাই না যে, পরের দিকে নামলে অসুবিধা হয়। তবুও বলব, ওপেন করার সময় আমার ধারণা পরিষ্কার থাকে। আগে থেকেই জানি নতুন বলের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে হবে। সামলাতে হবে এমন কয়েকজন বোলারকে যাদের বিরুদ্ধে আগেও খেলেছি। ফিল্ডিং কী হতে পারে সে বিষয়েও স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে। পরিকল্পনায় পরিষ্কার থাকতে হয়।’’

রোহিত আরও বলেন, ‘‘ছয় নম্বরে নামার সময় বল রিভার্স সুইং করতে শুরু করে। ফিল্ডারদের পজিশনও অন্য রকম হয়ে যায়। অনেক কিছু মাথায় রেখে ব্যাট করতে হয়। তাই বরাবরই ওপেনার হিসেবে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করি।’’

Advertisement

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে থাকলেও প্রথম একাদশে জায়গা হয়নি রোহিতের। অজিঙ্ক রাহানে ও হনুমা বিহারী মিডল অর্ডারে দুরন্ত ব্যাট করেছেন। ওপেনার হিসেবে খেলেছেন কে এল রাহুল ও মায়াঙ্ক। তা হলে ঠিক কবে তাঁকে জানানো হল, টেস্টেও ওপেনারের স্থান দেওয়া হতে পারে? রোহিতের উত্তর, ‘‘অনেক দিন ধরেই এ বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট কথা বলছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই পরিষ্কার ইঙ্গিত পেয়ে গিয়েছিলাম, ওপেনার হিসেবে সুযোগ আসতে পারে আমার। টিম ম্যানেজমেন্ট আমার থেকে কী চায়, সে বিষয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিল। আমিও নিজের মতামত ওদের পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে টেস্টে ওপেন করার প্রস্তুতি নিয়েছি। বুঝতে পেরেছিলাম, কখনও না কখনও এই সুযোগ আসবেই।’’

কী মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন রোহিত? নতুন টেস্ট ওপেনারের উত্তর, ‘‘লাল বলের ক্রিকেট ও সাদা বলের ক্রিকেটে ওপেনারের কাজ অনেকটাই আলাদা। টেকনিকের সঙ্গেই মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়। আগেই অঙ্ক কষে নিতে হবে, কী ভাবে নতুন বল সামলে ইনিংস আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। একজন ওপেনারের মনে কোনও সংশয় থাকা উচিত না।’’

দল পরিচালন সমিতি যখন তাঁকে ওপেনারের জায়গা দিতে চাইলেন, তখন কি একবারেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন? রোহিতের উত্তর, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যেকে অপেক্ষা করে একটি সুযোগের। জানতাম, এটা আমার কাছে অনেক বড় সুযোগ। আগামী দিনে হয়তো অনেক কঠিন সময় আসবে, কিন্তু তা নিয়ে এখনই ভাবতে চাই না।’’

গত দু’দিন বৃষ্টি হওয়ার পরে বাতাসে ছিল আর্দ্রতা। শুরুতে সুইংও পেয়েছে রাবাডা-ফিল্যান্ডার জুটি। কী ভাবে সামলালেন তাঁদের? রোহিতের ব্যাখ্যা, ‘‘দেশের মাটিতে বহু ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। দেখেছি, শুরুর সাত-আট ওভার ক্রিজ কামড়ে পড়ে থাকার পরে সুইং থাকে না। তার পরে দ্রুত রান করতে হয়। উইকেটে আটকে গেলে চলবে না। ভারতীয় পরিবেশে ফিল্ডারদের ঘেরাটোপে আটকে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। সেটা কিন্তু ভয়ঙ্কর।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement