নজরে: হারের পরে হতাশ নাদাল (বাঁ দিকে), উচ্ছ্বসিত জ়েরেভ। ছবি রয়টার্স।
মাদ্রিদ ওপেনে ইন্দ্রপতন। হেরে গেলেন রাফায়েল নাদাল। ধাক্কা খেল তাঁর ফরাসি ওপেনের প্রস্তুতি।
টেনিস মহল বলছে, রাফার হার যৌবনের কাছেও! যাঁর কাছে হারলেন, সেই জার্মান আলেকজান্ডার জ়েরেভের বয়স ২৪। আর স্পেনীয় মহাতারকা এখন ৩৩। তবু ক্লে কোর্টে খেলা বলে সবাই এগিয়ে রেখেছিলেন রাফাকে। বলা হচ্ছিল, বার্সেলোনায় যে ভাবে তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, এখানেও তেমন কিছুই হবে। শুক্রবার মাদ্রিদ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে হল উল্টোটা। জ়েরেভই জিতলেন ৬-৪, ৬-৪ সেটে। যার অর্থ, ফরাসি ওপেনের আগে ক্লে কোর্টে তৈরি হওয়ার জন্য আর একটাই প্রতিযোগিতা পাচ্ছেন রাফা। রোম ওপেন।
কে বলবে মায়ামি, মন্টে কার্লো আর মিউনিখ— তিন জায়গাতেই এর আগে শুরুতেই বিদায় নিয়েছিলেন জ়েরেভ। এখানে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠেন কে নিশিকোরি ও ড্যানি ইভান্সকে হারিয়ে। যাঁরা দু’জনই ক্রমতালিকার নিরিখে অনেকটাই পিছিয়ে আছেন জার্মান তারকার থেকে। তাই ষষ্ঠ বার মাদ্রিদ ওপেন জয়ের লক্ষ্যে নাদালকেই এগিয়ে রাখা হয়েছিল। জ়েরেভ নিজেও বলেছিলেন, ‘‘আগে কয়েক বার ওকে হারিয়েছি। কিন্তু ক্লে কোর্ট ওর নিজের জায়গা। তা ছাড়া আমার কাছে আগে হারায়, এখানে বদলা নেওয়ার জন্য রাফা মরিয়া থাকবে। সেটাই ওর চরিত্র।’’
জ়েরেভ অবশ্য আশার কথাও শুনিয়েছিলেন। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাকে নিজের প্রিয় শটগুলো কাজে লাগাতে হবে। সেই সঙ্গে আক্রমণাত্মক টেনিসও খেলা চাই। আসলে টেনিসে এই মুহূর্তের সেরা তিন তারকার বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতার শেষ দিকেই বেশি খেলতে হয়। আমি জীবনে বেশ কয়েক বার ওদের কাছে হেরেছি। আশা করছি, এ বার অন্তত রাফার বিরুদ্ধে তেমন কিছু হবে না।’’
সত্যিই মিলে গেল জ়েরেভের কথা! মাদ্রিদের পরিবেশকে তিনি দারুণ ভাবেই কাজে লাগিয়েছেন। তাঁর শটে গতি ছিল প্রবল। হাওয়া সমস্যায় ফেলেনি। কোর্টে একটু বেশি লাফিয়েছে বল। তবু জ়েরেভ নিখুঁত সব রিটার্ন মেরেছেন। শুরুর কিছুটা সময় বাদ দিলে সার্ভিস করেছেন খুব ভাল। তাই ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী মহাতারকা শেষরক্ষা করতে পারেননি। অথচ নাদাল শুরুটা ভাল করেছিলেন। একবার তো শূন্যে দাঁড় করিয়ে জার্মান তরুণের সার্ভিস ভাঙেন। এমনকি প্রথম সেটে ৪-২ এগিয়ে যান। কিন্তু সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ান জ়েরেভ। টানা চারটি গেম জিতে সেট বার করেন। দ্বিতীয় সেটের মাঝামাঝি সময়ে নাদাল পিছিয়ে পড়েন প্রতিপক্ষের ফোরহ্যান্ডের জবাব দিতে না পেরে। ম্যাচও হাতের বাইরে চলে যায়।
কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে নাদাল বলেছিলেন, ‘‘মাদ্রিদ আমার কতটা প্রিয়, বলে বোঝাতে পারব না। বিশ্বের কোথাও এত সমর্থন পাই না! এ বার অবশ্য বেশি মানুষ খেলা দেখতে পারছেন না। তবু কিছু দর্শক তো থাকছেন। আশা করছি, ওঁদের পাশে পেলে, সেমিফাইনালেও খেলব।’’ নাদালের অবশ্য আশাভঙ্গ হল। দর্শক সমর্থন পেয়েও জ়েরেভের আগ্রাসনের জবাব দিতে পারলেন না।
এ দিকে, একটি সেট পিছিয়ে পড়েও ডমিনিক থিম শুক্রবার মাদ্রিদ ওপেনের সেমিফাইনালে উঠলেন জন ইসনারকে হারিয়ে। ফল ৩-৬, ৬-৩ ও ৬-৪। শেষ চারে তাঁর সামনেই এ বার জ়েরেভ।