সর্বকালের সেরা টেস্ট একাদশ বেছে নিলেন বর্ষীয়ান লেগস্পিনার পীযূষ চাওলা। ভারতের হয়ে তিন টেস্ট, ২৫ ওয়ানডে ও সাত টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছিলেন। ইনস্টাগ্রাম লাইভ সেশনে তাঁর তৈরি দল জন্ম দিয়েছে বিতর্কের। কারণ, সুনীল গাওস্কর, রাহুল দ্রাবিড়, বিরাট কোহালি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, অনিল কুম্বলের মতো তারকাদের জায়গা হয়নি চাওলার দলে। এই দল বেছে ট্রোলড হয়েছেন প্রাক্তন লেগস্পিনার। কেমন সেই দল? দেখে নিন।
বীরেন্দ্র সহবাগ ওপেন করবেন চাওলার দলে। টেস্টে ওপেনিংয়ের ধরন পাল্টে দিয়েছিলেন তিনি। এমন আক্রমণাত্মক মনোভাবে শাসন করতেন বিপক্ষ বোলারদের যে ম্যাচের রাশ চলে আসত দলের হাতে। টেস্টে দু’বার তিনশোর বেশি রান করেছেন, সঙ্গে চার দ্বিশতরানও আছে। টেস্টে গড় পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই, স্ট্রাইক রেট আশির উপরে।
ম্যাথু হেডেন হবেন সহবাগের সঙ্গী। ১০৩ টেস্টে ৫০.৭৩ গড়ে ৮৬২৫ রান, ৩০ সেঞ্চুরি, ২৯ হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। একসময় তাঁর করা ৩৮০ রান ছিল টেস্টের সর্বাধিক স্কোর। সহবাগের মতো বাঁহাতি অজিও আক্রমণাত্মক ওপেনার। বড় ইনিংস খেলার ক্ষমতা ধরেন। ডানহাতি-বাঁহাতি জুটিতে ওপেনিং বিপক্ষ বোলারদের চাপে রাখবে।
তিনে রিকি পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক ১৬৮ টেস্টে ৫১.৮৫ গড়ে করেছেন ১৩৩৭৮ রান। ৪১ শতরান, ৬২ অর্ধশতরান এসেছে তাঁর ব্যাটে। সর্বাধিক ২৫৭। পেস বা স্পিন, দুইয়ের বিরুদ্ধেই তিনি স্বচ্ছন্দ। যে কোনও পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারেন।
চারে অতি অবশ্যই সচিন তেন্ডুলকর। টেস্টে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ, সবচেয়ে বেশি রান, সবচেয়ে বেশি শতরানের রেকর্ড রয়েছে মাস্টার ব্লাস্টারের। ভক্তদের কাছে ‘গড অফ ক্রিকেট’ মুম্বইকরই। চার নম্বরে দিনের পর দিন আকাশছোঁয়া প্রত্যাশার চাপ সামলে রান করে গিয়েছেন। যে কোনও বোলিং আক্রমণকে করেছেন শাসন।
পাঁচে ত্রিনিদাদের রাজপুত্র ব্রায়ান লারা। ১৩১ টেস্টে ৫২.৮৮ গড়ে ১১৯৫৩ রান, ৩৪ সেঞ্চুরি, ৪৮ হাফ-সেঞ্চুরির মালিক তিনি। স্ট্রাইক রেট ৬০.৫১। টেস্টে কোনও ইনিংসে সর্বাধিক রানের রেকর্ড তাঁরই। অপরাজিত ৪০০ রানের সেই ইনিংসে প্রতিফলিত লারার জিনিয়াস।
উইকেটকিপার হিসেবে অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে দলে নিয়েছেন চাওলা। ৯৬ টেস্টে ৪৭.৬০ গড়ে ৫৫৭০ রান করেছেন তিনি। সেঞ্চুরির সংখ্যা ১৭, হাফ-সেঞ্চুরির সংখ্যা ২৬। স্ট্রাইক রেট প্রায় ৮২। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২০৪। উইকেটকিপার হিসেবে স্পিনেও দক্ষতা প্রশ্নাতীত।
অলরাউন্ডার হিসেবে সাতে কপিল দেব। ১৩১ টেস্টে ৫২৪৮ রান, ৪৩৪ উইকেট। নিছক পরিসংখ্যানে অবশ্য তাঁকে মাপা অসম্ভব। ব্যাট হাতে আট সেঞ্চুরি, ২৭ হাফ-সেঞ্চুরি। বল হাতে ২৩ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট, ম্যাচে ১০ উইকেট দু’বার। ৮৩ রানে নয় উইকেট তাঁর সেরা বোলিং।
কপিলের পর রয়েছেন ওয়াসিম আক্রম। অনেকের মতে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা বাঁহাতি পেসার তিনিই। ১০৪ টেস্টে ৪১৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ২৫ বার, ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন পাঁচ বার। ১১৯ রানে সাত উইকেট তাঁর সেরা বোলিং। ব্যাটেও তিন সেঞ্চুরি রয়েছে। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৫৭।
এর পর কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন। ১৪৫ টেস্টে ৭০৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৩৭ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট, ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন দশ বার। ৭১ রানে আট উইকেট তাঁর সেরা বোলিং। গড় ২৫.৪১, স্ট্রাইক রেট ৫৭.৪। ব্যাটেও তিন হাজারের বেশি রান রয়েছে।
টেস্টে ক্রিকেটে প্রথম বোলার হিসেবে আটশো উইকেটের মালিক মুথাইয়া মুরলীথরনকেও নিয়েছেন চাওলা। ১৩৩ টেস্টে ২২.৭২ গড়ে, ৫৫ স্ট্রাইক রেটে ৮০০ উইকেট নিয়েছেন কিংবদন্তি অফস্পিনার। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ৪৫ বার, ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন ২২ বার। ৫১ রানে নয় উইকেট তাঁর সেরা বোলিং।
ডেনিস লিলি, ম্যালকম মার্শালরা নন, কার্টলি অ্যামব্রোজকে দলে রেখেছেন চাওলা। ৯৮ টেস্টে ৪০৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। গড় ২০.৯৯, স্ট্রাইক রেট ৫৪.৫, ইকনমি রেট ২.৩০। ২২ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তিন বার ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৮৫ রানে আট উইকেট তাঁর সেরা বোলিং।
দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে জ্যাক কালিসকে রেখেছেন চাওলা। অনেকের মতে, ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার তিনি। ১৬৬ টেস্টে ৫৫.৩৭ গড়ে ১৩২৮৯ রান করেছেন। ৪৫ সেঞ্চুরি, ৫৮ হাফ-সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ ২২৪। মিডিয়াম পেসে নিয়েছেন ২৯২ উইকেট। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন পাঁচবার। ৫৪ রানে ছয় উইকেট তাঁর সেরা বোলিং।